মুক্তি পাওয়ার ১৭ দিনের মাথায় ১০০ কোটি ডলারের ব্যবসা করে ফেলেছে ‘বার্বি’। সিনেমাটির পরিবেশক ওয়ার্নার ব্রাদার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে ওয়ার্নার জানায়, গত সপ্তাহের শেষেই টিকিট বিক্রি থেকে ১০৩ কোটি ডলার আয় করেছে ‘বার্বি’। আরেকটি বিষয় হলো, প্রথম নারী চলচ্চিত্রকার হিসেবে এককভাবে এই মাইলফলক অর্জন করেছেন গ্রেটা গারউইগ। ওয়ার্নার ব্রাদার্স এ ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছে।
ওয়ার্নার ব্রাদার্সের অভ্যন্তরীণ বিতরণ বিভাগের প্রেসিডেন্ট জেফ গোল্ডস্টেইন বিবিসিকে বলেন, গ্রেটা ছাড়া আর কারও পক্ষে এই প্রজন্মান্তরের আইকনকে এমন মজাদার, আবেগপূর্ণ ও বিনোদনমূলক গল্পের মাধ্যমে পর্দায় এভাবে জীবন্ত করে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব ছিল না।
এর আগে বেশ কয়েকজন নারী পরিচালকের নির্মিত চলচ্চিত্র ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে, তবে সেগুলো ছিল যৌথভাবে পরিচালিত। একক পরিচালক হিসেবে গ্রেটা প্রথম এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন।
পুরো ‘বার্বি’ চলচ্চিত্রে একধরনের গোলাপি আভা ছড়িয়ে আছে। এটি ইতিমধ্যে চলচ্চিত্র পরিচালকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সিনেমা হলগুলোর সামনে বার্বি পুতুলের সেলফি বক্স স্থাপন করা হয়েছে; মানুষ সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন, ছবি বা সেলফি তুলছেন।
‘বার্বি’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মার্গট রোবি; ‘কেন’ চরিত্রে রায়ান গসলিং। ছবিটি এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় করেছে ৪৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থান থেকে আয় করেছে ৫৭ কোটি ২০ লাখ ডলার।
বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, ‘বার্বি’ চলচ্চিত্রটির ১০০ কোটি ডলারের ব্যবসা চাট্টিখানি কথা নয়। মহামারির পর ‘বার্বি’ ছাড়া আর মাত্র পাঁচটি চলচ্চিত্র এই মাইলফলক অর্জন করেছে—‘দ্য সুপার মারিও ব্রাদার্স’, ‘স্পাইডার ম্যান: নো ওয়ে হোম’, ‘টপ গান: ম্যাভারিক’, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড ডমিনিয়ন’ ও ‘অ্যাভাটার সিকুয়েল’।
এখন সারা বিশ্বে হলিউডের দুটি ছবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে—‘বার্বি’ ও ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’। দর্শকেরা একটির সঙ্গে আরেকটির তুলনা করছেন। ‘বার্বি’ করা হয়েছে কয়েক প্রজন্মের প্রিয় পুতুল চরিত্র বার্বিকে নিয়ে আর ‘ওপেনহাইমার’ করা হয়েছে প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরি নিয়ে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিনেমা চেইন ভিউ সম্প্রতি বলেছে, গত চার বছরে সপ্তাহান্তে ‘ওপেনহাইমার’ ও ‘বার্বি’র মতো আর কোনো চলচ্চিত্রের এত টিকিট বিক্রি হয়নি।
‘বার্বি’ চরিত্রে অভিনয় করা রোবি নিজেও এই ছবির একজন প্রযোজক। এর আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, এই ছবির নির্মাণে রাজি করাতে স্টুডিওকে অনেক কিছু বলতে হয়েছে। তখন এর সফলতার বিষয়ে অনেক কিছু হয়তো বাড়িয়ে বলতে হয়েছে, কিন্তু যেকোনো মূল্যে এটি বানাতে চেয়েছেন তিনি।
এই ছবির প্রচারণা মানুষকে ছুঁয়ে গেছে। বিশ্বের অনেক শহর আক্ষরিকভাবেই গোলাপি হয়ে গেছে। লন্ডন, নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন শহরে গোলাপি বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের পাশে গোলাপি টার্ডিস বা একধরনের টাইম মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
পরিচালক গ্রেটা নারীবাদী চিন্তার জন্য পরিচিত। এর আগে তিনি যেসব চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, সেখানে তাঁর নারীকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনার ছাপ আছে। এই চলচ্চিত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর এই সিনেমার কেন্দ্রে আছে দুটি পুতুল, যারা বার্বিল্যান্ড ছেড়ে এই পৃথিবীতে চলে আসে। এ নিয়েই এই চলচ্চিত্র, বাকিটা জানার জন্য এটি দেখাই ভালো।