ক্রেতাদের কাছ থেকে মুদ্রা বিনিময় বা সোয়াপের মাধ্যমে চীনের ব্যাংকগুলো ডলার কেনা বাড়িয়েছে। গত জানুয়ারিতে এই প্রক্রিয়ায় তারা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ ডলার কিনেছে। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, রপ্তানিকারকেরা শুধু সাময়িক সময়ের জন্য চীনা মুদ্রা ইউয়ান কিনতে চান অর্থাৎ তাঁরা ডলার ধরে রাখতে চান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, চীনের ব্যাংকগুলো জানুয়ারিতে তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে ৫ হাজার ৯০ কোটি ডলার কিনেছে। এ বিষয়ে রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর কোনো মাসে তারা এত পরিমাণ ডলার কেনেনি।
এই তথ্যে দেখা যাচ্ছে, চীনের রপ্তানিকারকেরা এখন ক্রমবর্ধমান হারে বিদেশ থেকে প্রাপ্ত আয় বা প্রবাসী আয় ইউয়ানে রূপান্তরের জন্য মুদ্রা বিনিময়ের দ্বারস্থ হচ্ছেন। তাঁরা সরাসরি ডলার বিক্রি না করে এই পথে হাঁটছেন। কারণ, ডলার বিক্রি করে তাঁরা বেশি আয় করতে চান এবং সে জন্য ডলারের দর ওঠানামা দেখে মুদ্রা বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেন।
এ ধরনের মুদ্রা বিনিময়ের অর্থ হলো, রপ্তানিকারকেরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যাংকের কাছে ডলার গচ্ছিত রেখে ইউয়ান নেন এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে আবার ইউয়ান জমা রেখে ডলার গ্রহণ করেন।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ডের সুদহারের পার্থক্য জানুয়ারিতে আরও বেড়েছে; সে জন্য রপ্তানিকারকেরা এখন মুদ্রা বিনিময়ের বিষয়ে বেশি আগ্রহী। এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্তের সম্পর্ক আছে। অর্থাৎ তারা যখন পরিষ্কার বলে দিয়েছে যে শিগগিরই নীতি সুদহার কমানো হচ্ছে না, বাজারে তার নানামুখী প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। নীতি সুদহার কমবে না, এই ধারণা থেকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ডলার ধরে রাখার বিষয়ে আগ্রহী হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরাও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ডের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।
কমার্স ব্যাংকের ঋণবিষয়ক অর্থনীতিবিদ টমি উ বলেছেন, ইউয়ানভিত্তিক সুদহার ডলারভিত্তিক বন্ডের সুদের চেয়ে কম হওয়ায় চীনের রপ্তানিকারকেরা এখন যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু ডলার বিনিময় করে ইউয়ান নিচ্ছেন এবং বাকিটা রেখে দিচ্ছেন।
টমি আরও বলেন, চলতি বছরের একপর্যায়ে ফেডারেল রিজার্ভ ও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার কমানো শুরু করলেও এই প্রবণতা দীর্ঘস্থায়ী হবে। কারণ, ডলার ও ইউরোভিত্তিক বন্ডের সুদহার ইউয়ানভিত্তিক বন্ডের সুদহারের চেয়ে বেশি থাকবে।
গতকাল সোমবার চীনের ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ড এবং একই মেয়াদের মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের সুদহারের ব্যবধান ছিল ১৮৫ ভিত্তি পয়েন্ট; ২০২৩ সালের শেষ পর্যায়ে যা ছিল ১২৮ ভিত্তি পয়েন্ট।