ডলার
ডলার

ব্রিটেন থেকে মিলিয়নিয়াররা চলে যাবেন, বেশি হারে বাড়বে তাইওয়ানে

মার্কিন ডলারের হিসাবে যাঁরা ১০ লাখ ডলার সম্পদের মালিক বা মিলিয়নিয়ার, তাঁদের অনেকেই আগামী কয়েক বছরে ব্রিটেন ছাড়বেন। ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালের মধ্যে প্রতি ছয়জন মিলিয়নিয়ারের মধ্যে একজন ব্রিটেন ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমাবেন। ফলে ব্রিটেনের ক্ষতি হলেও লাভ হচ্ছে অন্য দেশের।

ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ রিপোর্ট ২০২৪ বুধবার প্রকাশিত হয়েছে। বৈশ্বিক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক ধনী ব্রিটেন ছাড়লেও মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা বাড়বে যুক্তরাষ্ট্রে। একইভাবে তাইওয়ানেও বাড়বে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা। ইউরোপের আরেক দেশ নেদারল্যান্ডসেও মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ৪ শতাংশ কমবে। ২০২৮ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৩২৮ জনে।

তবে ব্রিটেনে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা কমবে ১৭ শতাংশ। গত বছর দেশটিতে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ছিল ৩০ লাখ ৬১ হাজার ৩২৮। তবে ২০২৮ সাল নাগাদ এ সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ২৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৬৪। ধনীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার একটি কারণ হলো দেশটিতে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা জনসংখ্যার অনুপাতে খুব বেশি বলে মনে করেন পল ডনোভান।

ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল ডনোভান জুরিখে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলাফল যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য অনেক দেশেই দেখা যাচ্ছে। ব্রিটেন ‘নন-ডম’ সুবিধা বাতিল করার ফলে বিদেশে থেকে পাওয়া আয়ে কর অব্যাহতির সুবিধা নেই। এরও একটা প্রভাব রয়েছে।

পল ডনোভান বলেন, যেখানে কর কম দিতে হয়, ধনীরা সব সময় তেমন জায়গার খোঁজে থাকেন। তাঁর মতে, ব্রিটেন থেকে মিলিয়নিয়ারদের চলে যাওয়া যতটা না নীতিসুবিধা না পাওয়ার কারণে, তার চেয়ে অন্য দেশে বেশি সুবিধা পাওয়ার কারণে। তিনি এ ক্ষেত্রে দুবাই ও সিঙ্গাপুরের দিকে ইঙ্গিত করেন।

ব্রিটিশ আবাসন কোম্পানি উইঙ্কওয়র্থ জানিয়েছে, দেশটিতে উচ্চ মূল্যের বাড়ির চাহিদা কমেছে। এর কারণ হলো, ধনীদের লক্ষ্য করে নেওয়া করনীতি এবং বেসরকারি স্কুলের ওপর কর আরোপের বিষয়ে নতুন লেবার পার্টি সরকারের প্রস্তাবিত পদক্ষেপ।

ইউবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ডলার মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ১৬ শতাংশ। এ ছাড়া জার্মানিতে ১৪ শতাংশ, ফ্রান্সে ১৪ শতাংশ, জাপানে ২৮ শতাংশ, স্পেনে ১২ শতাংশ ও ইতালিতে ৯ শতাংশ মিলিয়নিয়ার বাড়বে।

বৈশ্বিক সম্পদ বাড়বে

ইউবিএস বলছে, সম্পদ হিসাব করতে পরিবারের আর্থিক সম্পত্তির পাশাপাশি সত্যিকার সম্পত্তিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঋণ বাদ দেওয়া হয়েছে। মোট ৫৬টি দেশের ওপর ভিত্তি করে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিশ্বের ৯২ দশমিক ২ শতাংশ সম্পদ কেন্দ্রীভূত রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সম্পদ ২০২৩ সালে ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২ সালে সম্পদ ৩ শতাংশ কমেছিল। কমপক্ষে ১০ লাখ ডলার আছে, এমন পূর্ণবয়স্ক মানুষের সংখ্যা ৫৬টি দেশের মধ্যে ৫২টি দেশেই বাড়বে। তবে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হারে বাড়বে তাইওয়ানে—৪৭ শতাংশ। মূলত মাইক্রোচিপশিল্পের কারণে এ বৃদ্ধি ঘটবে।

ইউবিএস বলছে, ১৫ বছর ধরে তারা যে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, সম্পদ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোতে। এই বৃদ্ধি প্রায় ১৭৭ শতাংশ। এরপরে আছে দুই আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলো। সেসব দেশে বৃদ্ধির হার ১৪৬ শতাংশ।

তবে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ঋণের হারও বেশ বেড়েছে। ২০০৮ সাল থেকে এ অঞ্চলে মোট ঋণ বেড়েছে ১৯২ শতাংশ।