মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের কারণে ভারতের বাজারে সোনার দাম ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়লেও উৎসবের মৌসুমে দেশটিতে সোনার বিক্রি বরং আগের তুলনায় বেড়েছে। এবারের দুসেরা (২৪ অক্টোবর পালিত হয়—উত্তর ভারতে বিজয়দশমীর স্থানীয় রূপ)-নবরাত্রি মৌসুমে সোনার বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
ভারতের শীর্ষ গয়না বিক্রেতা মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড, পিএনজি জুয়েলার্স আর সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের সূত্রে এ খবর দিয়েছে দ্য ইকোনমিক টাইমস।
সোনার পাশাপাশি ভারতে রুপার বিক্রিও চাঙা। জুলাই-আগস্ট থেকে এ ধারা শুরু হয়েছে এবং এখনো তা চলছে।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার আগে ভারতের বাজারে সোনার দাম ছিল প্রতি ১০ গ্রামে ৫৭ হাজার ৪১৫ রুপি; হামলার পর এক–দুই সপ্তাহে তা প্রতি ১০ গ্রামে ৬০ হাজার ৬১২ রুপিতে উঠেছে।
পিএনজি জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৌরভ গডগিল বলেছেন, গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিক থেকেই সোনার বিক্রি চাঙা। নবরাত্রির শুরু থেকেই বিক্রি বাড়ছে। তাঁর আশা, আগেরবারের তুলনায় এবার ৩০ শতাংশ বেশি বিক্রি হবে।
গডগিল আরও বলেন, সব ধরনের গয়নাই বিক্রি হচ্ছে, বিশেষ করে নেকলেস, বালা ও বিয়ের অন্যান্য ভারী গয়নার বিক্রি বেড়েছে।
এদিকে টাইটানের গয়না বিভাগ জানিয়েছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ১৯ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। এ প্রান্তিকের প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে, বিয়ের অনুষ্ঠান ও উচ্চ মূল্যের গয়নার বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে বিক্রি বেড়েছে।
সেই সঙ্গে আরেক কোম্পানি কারাটলেনের বিক্রিও অনেকটা বেড়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তাদের বিক্রি বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। এ কোম্পানিতে টাইটানের হিস্যা ৯৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
এদিকে সামনে আসছে বিয়ের মৌসুম। ধারণা করা হচ্ছে, এখন থেকে মার্চের শেষ নাগাদ ভারতে ৩৫ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠান হবে।
মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে সোনার দাম বেড়ে যাবে, এ আশঙ্কা থেকেও ভারতে সোনার দাম বাড়ছে।
কেরালাভিত্তিক মালাবার গোল্ডের ক্ষেত্রে দুসেরা উৎসব থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ধনতেরাস ও দিওয়ালির সময়ও বিক্রির এই চাঙাভাব অব্যাহত থাকবে। কোম্পানির চেয়ারম্যান এমপি আহাম্মেদ বলেছেন, চাহিদা ও বিক্রয়কেন্দ্র বেড়ে যাওয়ার কারণে চলতি বছরের দুসেরায় বিক্রি ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
ভারতের পূর্বাঞ্চলে সোনার বাজার অনেকটাই মূল্যসংবেদনশীল। সেখানেও এবারের দুসেরায় হিরার গয়না বিক্রি বেড়েছে ২০ শতাংশ। বুলিয়ন বিক্রেতারা বলেছেন, বিনিয়োগ ও খুচরা বিক্রির চাহিদা বেড়েছে; সে কারণে মূল্যও বাড়ছে।
রিদ্দিসিদ্ধি বুলিয়নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পৃথ্বীরাজ কোটারি বলেন, ‘সোনার বাজারের মৌলিক ও কারিগরি পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমার ধারণা, আগামী বছর সোনার দাম ১০ শতাংশ বাড়বে। দুসেরার মতো শুভক্ষণ সোনা কেনার সবচেয়ে ভালো সময়, মানুষের মধ্যে সেই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।’