ভারতের বাজারে টমেটোর দাম কমতে শুরু করেছে। অনেক শহরেই টমেটোর দাম কেজিতে ১০০ রুপির নিচে নেমে এসেছে, যদিও ১৫ দিন আগেই তা কেজিতে ২৫০ থেকে ২৬০ রুপিতে বিক্রি হয়েছে। মূলত সরবরাহ বাড়তে শুরু করায় টমেটোর দাম কমতে শুরু করেছে।
এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যানে করে ৪০ টাকা কেজি টমেটো বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় এনএএফইডি ও এনসিসিএফ নামের দুটি সরকারি সমবায় সমিতির মাধ্যমে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে ইতিহাসে এই প্রথম খোলা ভ্যানে করে টমেটো বিক্রি করতে হয়েছে—যেসব শহরে টমেটোর দাম প্রতি কেজি ২৫০ রুপিতে উঠে গিয়েছিল, সেই সব শহরে।
ভারতের ভোক্তা অধিকারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংগৃহীত তথ্যে দেখা যায়, চলতি আগস্ট মাসের ৪ তারিখেও ভারতের ৩১টি কেন্দ্রে টমেটোর দাম ছিল প্রতি কেজি ২০০ রুপি, কোথাও কোথাও তা সর্বোচ্চ ২৫৭ রুপিতেও উঠেছিল। তবে এখন কেবল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ছাড়া আর কোথাও টমেটোর দাম ২০০ রুপির বেশি নয়।
গতকাল শুক্রবার ভারতের বাজারে টমেটোর গড় দাম ছিল প্রতি কেজি ৯৬ রুপি, এক পক্ষকাল আগে যা ছিল ১৪০ রুপি। দিল্লি, কলকাতা ও চেন্নাই—এই তিন শহরে টমেটোর দাম যথাক্রমে ৯৭, ১০০ ও ৫২ রুপি। তবে মুম্বাই শহরে টমেটোর দাম এখনো বেশি; ৪ আগস্ট যা ছিল ১৫৯ রুপি, গতকাল তা ১৪৭ রুপিতে নেমে এসেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, আগামী দুই সপ্তাহে টমেটোর দাম আরও কমে আসবে। তাঁরা আশা করছেন, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
হিসাব অনুসারে, আগামী মাসে টমেটোর মাসিক উৎপাদন ৩ গুণ বেড়ে দাঁড়াবে ২ লাখ ১৪ হাজার টনে।
জুলাই মাসে ভারতের কিছু অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা হওয়ায় সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হয়। টমেটোর দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের বাজারে অন্যান্য সবজির দামও বেড়ে যায়। টমেটোর দাম প্রতি কেজিতে ২৫০ রুপি উঠে গেলে অনেক পরিবারই টমেটো খাওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়, যদিও ভারতের অনেক প্রথাগত খাবারের অন্যতম উপকরণ হচ্ছে টমেটো। এমনকি বার্গার কিংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানও বার্গার থেকে টমেটো বাদ দিতে বাধ্য হয়েছিল।
তবে অনেক কৃষক এই সময়ে টমেটো বিক্রি করে বিপুল মুনাফা করেছেন। অনেক কৃষক রীতিমতো সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছিলেন; সংবাদমাধ্যম তাঁদের পেছনে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।