চীনের বৃহত্তম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবাকে পৃথক ছয়টি ইউনিটে ভাগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার আলিবাবা গ্রুপ জানিয়েছে, এটি (আলিবাবা) ছয়টি ভিন্ন ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে একটি হোল্ডিং কোম্পানিতে পরিণত হবে। খবর রয়টার্স ও নিউইয়র্ক টাইমসের
এ পুনর্গঠনকে প্রতিষ্ঠানের ২৪ বছরের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ সাংগঠনিক ‘সংস্কার’ হিসেবে বর্ণনা করেছে আলিবাবা। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, পুনর্গঠিত প্রতিটি ইউনিটের নিজস্ব প্রধান নির্বাহী ও পরিচালনা পর্ষদ থাকবে, যেন তারা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
কর্মীদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে আলিবাবার প্রধান নির্বাহী ড্যানিয়েল ঝাং বলেন, ‘এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো আমাদের সংস্থাকে আরও কর্মদক্ষ করা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াগুলোকে সংক্ষিপ্ত করা ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর পরিস্থিতি তৈরি করা।’
ভাগ হওয়া ইউনিটগুলো হচ্ছে ক্লাউড ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ, তাওবাও টিমল কমার্স গ্রুপ, লোকাল সার্ভিসেস গ্রুপ, কাইনিয়াও স্মার্ট লজিস্টিকস গ্রুপ, গ্লোবাল ডিজিটাল কমার্স গ্রুপ এবং ডিজিটাল মিডিয়া ও এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ।
আলিবাবা জানিয়েছে, ভাগ হওয়া ইউনিটগুলোর অধিকাংশ চীনের বাইরে থেকে তহবিল সংগ্রহ বা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা করছে। শুধু চীনের ই-কমার্স ইউনিট তাওবাও টিমল কমার্স গ্রুপ সম্পূর্ণ আলিবাবার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে থাকবে।
আলিবাবার প্রধান নির্বাহী ড্যানিয়েল ঝাং বলেন, প্রতিটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে বাজারের দ্রুত পরিবর্তনকে মোকাবিলা করতে হবে। আর প্রত্যেক কর্মীকে ‘একজন উদ্যোক্তার মানসিকতায় ফিরে যেতে হবে।’
ঝাং আলিবাবা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব সামলাবেন। পাশাপাশি তিনি ক্লাউড ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের সিইও হিসেবেও কাজ করবেন।
আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা এক বছর ধরে বিদেশে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন। গত সোমবার তিনি দেশে ফেরেন। এর এক দিন পরই আলিবাবার এ পুনর্গঠনের সংবাদ আসে।
চীন সরকার গত দুই বছরে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, বৃহৎ প্রতিষ্ঠান আলিবাবার ভাগ হওয়াকে সেই পদক্ষেপের অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে এত দিন ধরে বিনিয়োগকারীরা আলিবাবার প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে যে উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন, এ বিভাজনের মাধ্যমে তা অনেকটা দূর হবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত চীনা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবার বিরুদ্ধে ২০২০ সালের শেষের দিকে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। এর পর থেকে তাদের শেয়ারের দাম প্রায় ৭০ শতাংশ কমেছিল। তবে সম্প্রতি সেই শেয়ারের দাম আবার ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে।