যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিজ ট্রাসের উত্তরাধিকারী হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী-রাজনীতিক ঋষি সুনাক এখন একরকম নিশ্চিত। এ খবরে শান্ত হয়েছে দেশটির বাজার।
বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পেনি মোরডান্ট প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় থেকে ছিটকে পড়ার কারণে ঋষি সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষামাত্র। এর আগে গত রোববার বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় থেকে ছিটকে পড়েন। এ খবরে ব্রিটিশ পাউন্ড ডলারের সাপেক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে অপরিবর্তিত ছিল। একই সঙ্গে সরকারের নেওয়া ঋণের সুদহারও কম ছিল। এর আগে গতকাল দিনের শুরুতে ১ পাউন্ডের দর দাঁড়ায় ১ দশমিক ১৪ ডলার।
কয়েক মাস ধরে পাউন্ড অস্থির আচরণ করছে। গত মাসে ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ মুদ্রার রেকর্ড দরপতন হয়। আর লিজ ট্রাসের প্রথম অর্থমন্ত্রী কোয়াজি কোয়ার্টাঙের সংক্ষিপ্ত বাজেটের পর সরকারি ঋণের সুদহারও বাড়তে থাকে।
সংক্ষিপ্ত বাজেটে কোয়াজি কোয়ার্টাঙ ক্ষতিপূরণের পরিকল্পনা ছাড়াই বড় ধরনের কর ছাড়ের প্রস্তাব দেন। এতে বাজারে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের ঋণের সুদহার বাড়তে থাকে। এরপর তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন জেরেমি হান্ট। কিন্তু তাতেও তেমন কাজ হয়নি। শুক্রবার পাউন্ডের দরপতন হয়। পাউন্ডের বিনিময় মূল্য কমে ১ দশমিক ১১ ডলারে নেমে আসে।
তবে গতকাল যুক্তরাজ্যের সরকারি ঋণের সুদহার কমে আসে। ৩০ বছরের মেয়াদে পরিশোধযোগ্য বন্ডের সুদহার দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, অথচ গত ২৮ সেপ্টেম্বর এই সুদহার ৫ দশমিক ১৭ শতাংশে উঠে যায়।
যুক্তরাজ্যের বর্তমান অর্থমন্ত্র্রী জেরেমি হান্ট ঋষি সুনাকের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। কথা আছে, ৩১ অক্টোবর তিনি সরকারি আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব; অর্থাৎ বাজেট দেবেন।
এদিকে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে দেশটির মানুষকে বড় মূল্য দিতে হবে বলে মনে করেন ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক গভর্নর মারভিন কিং। কারণ হিসেবে তিনি বিবিসিকে বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী কোয়াজি কোয়ার্টাঙ যেসব কর ছাড়ের পরিকল্পনা দিয়েছিলেন, নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট সাবেক অর্থমন্ত্রীর সব পরিকল্পনা বাতিল করে দিয়েছেন। সরকারি ব্যয়ও হ্রাসের কথা বলেছেন। তা সত্ত্বেও সরকারের ঋণ এখন যে পর্যায়ে আছে, তা শোধ করতে গেলে জনগণের করের বোঝা বাড়বে।