শিভাস রিগ্যাল, গ্লেনলিভেট ও অ্যাবসলিউটের মতো অ্যালকোহল–জাতীয় পানীয়র মূল কোম্পানি পারনড রিকার্ড বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে ভারত তাদের বৃহত্তম বাজার হতে যাচ্ছে। তবে ভারত কবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে যাবে, তার দিনক্ষণ পরিষ্কার করে না বললেও বর্তমানে ভারতের বাজার থেকে কোম্পানিটি বৈশ্বিক রাজস্বের ১০ শতাংশের বেশি আয় করছে। বিশ্ববাজারে তাদের মোট বেচাবিক্রির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই হচ্ছে ভারতে।
পারনড রিকার্ডের ভারত শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জঁ তুবো ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, ‘ভারতের বাজারে আমাদের প্রবৃদ্ধি অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। অর্থাৎ আমরা এখানে ভালো করছি, কিন্তু তার মানে এই নয় অন্যান্য দেশে আমার যে সহকর্মীরা কাজ করছেন, তাঁদের ছোট করছি। ভারতের মতো বাজারের সম্ভাবনা অনেক বেশি।’
ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল বাজার। অনেক কারণেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশটিকে পছন্দ করেন। বাজারের পাশাপাশি দেশটির সামষ্টিক অর্থনীতির অনুকূল পরিবেশ, তরুণ জনগোষ্ঠীর আধিক্য ও আইনগতভাবে অ্যালকোহল–জাতীয় পানীয় পান করার মতো আড়াই কোটি বৈধ জনগোষ্ঠী দেশটিকে অ্যালকোহল–জাতীয় পানীয়র জন্য উৎকৃষ্ট বাজারে পরিণত করেছে। সে কারণে এই ফরাসি ডিসটিলার কোম্পানি ভারতকে তার তিনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশের একটি মনে করে। বাকি দুটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
গত মার্চ মাসে সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটির ভারত শাখার রাজস্ব আয় ১০ শতাংশ বেড়ে ২৫ হাজার ১৪২ কোটি রুপিতে উঠেছে, যদিও এই সময় তাদের মুনাফা ৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩০০ কোটি রুপিতে নেমে গেছে। সেটা অবশ্য কর ও বিজ্ঞাপনী ব্যয়ের কারণে হয়েছে।
কোম্পানিটি ভারতের হুইস্কি বাজারের প্রায় এক–চতুর্থাংশ নিজেদের হাতে আনতে পেরেছে, যদিও সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে তাদের ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা আছে, বিষয়টি তা নয়। তারা মূলত ব্লেন্ডার্স প্রাইড, রয়েল স্ট্যাগ ও ইম্পিরিয়াল ব্লুর মতো দামি ও বেশি দামি ব্র্যান্ডগুলো থেকে রাজস্ব আয় করে থাকে। ভারতের বাজারে যে স্কচ সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়, সেটিও এই কোম্পানির, হান্ড্রেড পাইপারস নামের এই স্কচ বছরে ১৫ লাখ বোতল বিক্রি হয়। তবে দামি পানীয়ের ক্ষেত্রে পারনড রিকার্ড ইদানীং বেশ কয়েকটি অন্য কোম্পানির প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়েছে।
তুবো বলেন, ভারতের বাজার খুব একটা সহজ হবে না, এর নানা ধরনের জটিলতা আছে। প্রতিযোগিতা নিয়ে তিনি চিন্তিত নন উল্লেখ করে বলেন, ভারতের বাজারে আরও অনেক কোম্পানি একই কাতারে আছে, এতে অখুশি হওয়া কিছু নেই। বরং এতে ভোক্তাদের আরও ভালো পণ্য পাওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে। সামাজিকভাবে আমরা ভারতের বাজারে আরও ভোক্তা তৈরি করতে পারব।