মুনাফা কমেছে খেলনা তৈরির বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান লেগোর

করোনা মহামারির সময় রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছিল ডেনমার্কভিত্তিক খেলনা তৈরির প্রতিষ্ঠান লেগো। কিন্তু চলতি বছরের অর্ধবার্ষিক, অর্থাৎ প্রথম ছয় মাসে মুনাফা কমেছে প্রতিষ্ঠানটির। এ সময়ে লেগোর মুনাফা ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে, যা পরিমাণে ৮০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। তবে একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে ১ শতাংশ।

ব্যবসায়িক এই মন্দা কাটাতে লেগো বর্তমানে চীনকে ঘিরে পরিকল্পনা করছে। কারণ, চীনের ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি সব সময় পশ্চিমা পণ্য কিনতে আগ্রহী। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন তাদের লকডাউন তথা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ফলে দেশটিতে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ৫৮টি শাখা খুলেছে লেগো। যদিও এতে আশানুরূপ হারে বিক্রি বাড়েনি। খবর বিবিসির

প্রতিষ্ঠানটি ভেবেছিল, চীন আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে এবং দেশটির লোকজন কেনাকাটা শুরু করবেন। কিন্তু সে প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি বাড়েনি। তবু চীনের বাজার লক্ষ্য করে আপাতত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে লেগো। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীনে আরও শাখা তথা বিক্রয়কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে চীনের সাংহাই ও বেইজিংয়ে দুটি বড় ফ্ল্যাগশিপ দোকান খুলেছে তারা।  

প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ ও ২০২৫ সালের মধ্যে যথাক্রমে ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্রে নতুন দুটি কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। বর্তমানে তারা প্লাস্টিকের খেলনা বেশি তৈরি করে। এ নিয়েও প্রতিষ্ঠানটি বেশ চিন্তিত। সে জন্য টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য কোম্পানিটি তিন বছরে তিন গুণ অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্রিশ্চিয়ানসেন বলেন, কাঁচামালের দাম ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির ফলে মুনাফা অর্জন কমেছে। তিনি আরও বলেন, মুনাফা কমলেও লেগো এখনো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় খেলনা নির্মাতা।

২০০০ সালের দিকে বেশ কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছিল লেগো। তখন বড় ঋণের চাপে পড়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। পুরোনো পণ্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা ও নতুন পণ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় তখন প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি কমে যায় বলে দাবি বিশ্লেষকদের।

কোম্পানিটি সে অবস্থা থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য তখন বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চরিত্রগুলোর খেলনা বানিয়ে বিক্রি শুরু করে যেমন ব্যাটম্যান, হ্যারি পটার ও নিনজাগো চরিত্রগুলোর মতো পরিচিত খেলনা তৈরি করে তারা ব্যবসা পুনরুদ্ধার করে। বিশ্বব্যাপী লেগো চলচ্চিত্র ও থিম পার্কগুলোর সাফল্যের সঙ্গে লেগোর সফলতা নির্ভর করত তখন।

বয়সে একটু বড় শিশুদের জন্য লেগো আর্কিটেকচারও চালু করে। তারা গুগেনহেইম মিউজিয়াম, বুর্জ খলিফা, রোবি হাউসের মতো লোগো আর্কিটেকচার চালু করে নিজেদের বাজার প্রসারিত করে। এ ছাড়া ‘মিনি ডল’ চালুর মাধ্যমেও তারা তাদের বাজার বাড়াতে সক্ষম হয়।