সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি রপ্তানির ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা করছে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডস। দেশটি জানিয়েছে, তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভৌগোলিক রাজনীতির অংশ হিসেবে চীনে চিপ রপ্তানি কমাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। নেদারল্যান্ডসের এ পরিকল্পনা সেই প্রচেষ্টার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
ডাচ বাণিজ্যমন্ত্রী লিসিয়ে শ্রেইনেমাশের গতকাল বুধবার দেশটির সংসদে পাঠ করা এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, আগামী গ্রীষ্মের আগেই নিষেধাজ্ঞাগুলো চালু করা হবে। যদিও মন্ত্রীর ওই বক্তব্যে চীন বা নির্দিষ্ট কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা ছিল না।
চীনের চিপ তৈরির শিল্পকে বাধা দিতে এবং এর মাধ্যমে সামরিক অগ্রগতি কমানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য চীনের কাছে চিপ ও চিপ তৈরির প্রযুক্তি বিক্রি না করতে অনুরোধ জানিয়েছে দেশটি।
গত অক্টোবরে চীনে মার্কিন চিপ তৈরির সরঞ্জাম রপ্তানির ওপরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর করতে নেদারল্যান্ডস ও জাপানের মতো অন্যান্য প্রধান চিপ প্রযুক্তি তৈরিকারী দেশের সমর্থন প্রয়োজন। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরে মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ফলে চিপ প্রযুক্তি রপ্তানি কমানোর নতুন যে পরিকল্পনা নেদারল্যান্ডস নিয়েছে, সেটিকে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে সাড়া দেওয়া বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, অপরিহার্য চিপ তৈরি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বর্তমান বিশ্বে অন্যতম শীর্ষ দেশ হলো নেদারল্যান্ডস। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহে জাপানও তাদের চিপ সরঞ্জাম রপ্তানি নীতিতে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিতে পারে বলে সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে।
ডাচ বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রেইনেমাশের বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে, বিশেষ করে ডিইউভি লিথোগ্রাফি সিস্টেম প্রযুক্তি রপ্তানিতে তাঁরা কঠোরতা অবলম্বন করবেন।
নেদারল্যান্ডসের প্রধান সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি এএসএমএল এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, এখন থেকে ডিইউভি প্রযুক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে হয়তো তাদের পৃথক নিবন্ধন নিতে হবে। তবে এ কারণে ২০২৩ সালে আর্থিক ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কোম্পানিটি আশা করছে, ২০২৩ সালে চীনে প্রায় ২২০ কোটি ইউরোর ডিইউভি প্রযুক্তি রপ্তানি হবে, যা গত বছরের প্রায় কাছাকাছি। তবে সামগ্রিকভাবে সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি রপ্তানি ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে তাদের।