চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি আধুনিক পরিশোধনাগার কমপ্লেক্স স্থাপন করতে যাচ্ছে সৌদি আরবের বৃহত্তম জ্বালানি কোম্পানি আরামকো। এ জন্য কোম্পানিটি চীনা অংশীদারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। খবর গালফ নিউজের
বেইজিংয়ে চীন ডেভেলপমেন্ট ফোরামে রোববার আরামকোর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন নাসের বলেন, চীনের লিয়াওনিং প্রদেশে সমন্বিত পরিশোধনাগার এবং পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য দেশটির নর্থ হুয়াজি কেমিক্যাল ও পাঞ্জিন জিনচেংয়ের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে আরামকো। তিনি আরও বলেন, চীনের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা ও উচ্চ মানসম্পন্ন উন্নয়নের জন্য জ্বালানি ও রাসায়নিকের অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎস হতে চায় আরামকো।
ছয় বছর আগে ২০১৭ সালের মার্চে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের বেইজিং সফরের সময় লিয়াওনিং পরিশোধনাগার কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়ে চীন-সৌদি আরবের মধ্যে প্রাথমিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর দুই বছর পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বেইজিং সফরের সময় চীনা দুই অংশীদারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায় আরামকো। পরবর্তী সময়ে চীনের করনোভাইরাসের সংক্রমণ ও লকডাউনের কারণে পরিশোধনাগার কমপ্লেক্স স্থাপনের বিষয়টি থমকে যায়।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে গত বছর বিনিয়োগের আলোচনাটি আবার পুনরুজ্জীবিত হয়। গত বছরের মার্চে আরামকো জানায়, চীনের নর্থ গ্রুপ করপোরেশনের সঙ্গে দৈনিক তিন লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল পরিশোধনে বিনিয়োগ করবে। নর্থ গ্রুপ করপোরেশন নরিনকো নামে পরিচিত, যা কিনা নর্থ হুয়াজি কেমিক্যাল ও পাঞ্জিন জিনচেংয়ের মূল কোম্পানি।
মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানায়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনের লিয়াওনিং প্রদেশে এই সমন্বিত পরিশোধনাগার এবং পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু হবে। ২০২৫ সালের শেষ দিকে এটি উৎপাদনে যাবে। পুরোপুরি উৎপাদনে যাবে তার পরের বছর।
চীনের এই কমপ্লেক্সে দৈনিক ৩ লাখ জ্বালানি তেল পরিশোধনের সক্ষমতা থাকবে। আর পেট্রোকেমিক্যাল ইউনিটে বছরে ১৬ লাখ ৫০ হাজার ইথালিন ও ২০ লাখ টন প্যারাজাইলিন উৎপাদন সক্ষমতা থাকবে। চীনের এই কমপ্লেক্স দিনে ২ লাখ ১০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করবে।
সৌদি আরামকো গত বছর ১৬ হাজার ১১০ কোটি মার্কিন ডলার মুনাফা করেছে। লাভের এ অঙ্ক তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর আরামকো মুনাফা ৪৬ শতাংশ বেশি ছিল। বিপুল এ মুনাফা এসেছে জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্য, আগের তুলনায় বেশি তেল বিক্রি এবং পরিশোধিত তেলে আরও বেশি লাভের কারণে। আরামকোর মতো গত বছর বিপুল মুনাফা করেছে বিশ্বের অন্যান্য বড় তেল কোম্পানি, যেমন বিপি, শেল, এক্সনমোবিল ও শেভরন।