অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি কমার যে ধারা বছরের মাঝামাঝি শ্লথ হয়ে পড়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় দেশটিতে ভোক্তামূল্য বেড়েছে। অর্থনীতিবিদেরা আগেই ধারণা করেছিলেন যে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ফলে যা ধারণা করা হয়েছিল, আগামী বছর তার চেয়ে কমসংখ্যকবার সুদের হার হ্রাস করা হতে পারে।
রয়টার্স জানিয়েছে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে টানা চতুর্থ মাসের মতো মূল্যসূচক বাড়ল। বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। বুধবার প্রকাশিত শ্রম মন্ত্রণালয়ের ব্যুরো অব লেবারের পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বার্ষিক হিসাবে অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। রয়টার্সের এক জরিপে অর্থনীতিবিদেরা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি বাড়ার প্রত্যাশা করেছিলেন।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ে মার্কিন ভোটাররা অসন্তুষ্ট ছিলেন, যা গত সপ্তাহের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ আগামী বছরে বেশ কয়েকবার সুদের হার কমাবে এমন আশা করা হচ্ছিল।
অর্থনীতিবিদেরা অবশ্য মনে করেন, ট্রাম্প যদি তাঁর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক নীতিমালা বাস্তবায়ন করেন, তাহলে আগামী বছর মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। তাঁর নীতিমালার মধ্যে রয়েছে কর হ্রাস এবং আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ।
নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অবৈধ অভিবাসীদের গণহারে বহিষ্কার করার যে কর্মসূচি নিয়েছেন, তা যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিক–সংকট তৈরি করবে বলে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন। এ কারণে ব্যবসার খরচ বাড়বে, যা আবার শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ঘাড়ে চাপানো হবে।
আগামী ডিসেম্বরে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, আগামী বছরে সুদের হার কমানোর সুযোগ সীমিত হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, ট্রাম্পের নীতি অপরিবর্তিত থাকবে এবং সিনেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিনিধি পরিষদেও রিপাবলিকান পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। সে কারণে মার্কিন বন্ডের মুনাফার হার বাড়ছে।
২০২২ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ১ শতাংশে উঠেছিল। সেখান থেকে এই হার যথেষ্ট কমেছে। তবে এখনো তা ফেডের ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ওপরে রয়েছে। গত সপ্তাহে ফেড স্বল্পমেয়াদি সুদের হার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়েছে। এই সুদের হার এখন সাড়ে ৪ শতাংশ থেকে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।