মানুষকে প্রায়ই কাজের জন্য বা কাজের সুযোগ সন্ধানে এক শহর থেকে আরেক শহরে যেতে হয়। নতুন শহর বেছে নেওয়ার বেলায় যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে আলোচনা হয়, সেটি হলো সেই শহরের জীবনযাত্রার ব্যয়। দেখে নেওয়া যাক, বিশ্বের কোন শহরে জীবনযাত্রার ব্যয় সবচেয়ে বেশি।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মার্সারের ২০২৪ সালের তালিকা অনুসারে, প্রবাসীদের জন্য এখন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হচ্ছে হংকং। আন্তর্জাতিক শ্রমিকদের নিয়ে করা জরিপের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি এই তালিকা প্রণয়ন করেছে। হংকং শুধু এবার নয়, আগের দুই বছরেও বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর ছিল। হংকংয়ের পরের স্থানেই আছে সিঙ্গাপুর।
চলতি বছরের তালিকায় নিউইয়র্ক শহর ১ ধাপ পিছিয়ে সপ্তম স্থানে নেমে এসেছে। শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে লন্ডন আছে অষ্টম স্থানে; গত বছরের তুলনায় এবার তারা ৯ ধাপ এগিয়েছে।
মার্সারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক পরিসরে কাজ করা কর্মীরা তা টের পাচ্ছেন, সেটি তারা দীর্ঘমেয়াদে অন্য কোনো দেশে কাজ করুন বা স্বল্প মেয়াদে।
মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠানামা এই কর্মীদের সঞ্চয় ও বেতনে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলছে। মার্সারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাড়ির বাড়তি দাম ও মূল্যস্ফীতির ওঠানামার কারণে প্রবাসী শ্রমিকদের বেতন–ভাতায় প্রভাব পড়ছে।
প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, প্রবাসীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০টি শহরের মধ্যে অর্ধেক বা ৫টি শহরের অবস্থান পশ্চিম ইউরোপে, যার মধ্যে ৪টি শহর সুইজারল্যান্ডে।
মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হচ্ছে দুবাই। বৈশ্বিক পরিসরে দুবাইয়ের অবস্থান পঞ্চদশ; ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর তারা তিন ধাপ এগিয়েছে।
অন্যদিকে বসবাসের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় এবারও ইউরোপীয় শহরগুলোর প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। ইউরোপের এই ব্যয়বহুল শহরগুলোর মধ্যে ১১তম স্থানে আছে কোপেনহেগেন, ২৪তম স্থানে আছে ভিয়েনা, ২৯তম স্থানে আছে প্যারিস ও ৩০তম স্থানে আমস্টারডাম।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সংবাদে বলা হয়েছে, এই যে ইউরোপের শহরগুলো বসবাসের জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় ওপরের দিকে উঠে এসেছে, এর মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, সেখানে বসবাসের ব্যয় কতটা বাড়ছে।
এ তালিকায় সুইজারল্যান্ডের একাধিক শহরের উঠে আসার মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, দেশটিতে জীবনযাপনের ব্যয় কেবল বাড়ছেই। এ ছাড়া প্রবাসীদের জন্য বসবাসের শহরের তালিকায় লন্ডনের অষ্টম স্থানে থাকার মধ্য দিয়ে শহরটি ইউরোপের অন্যতম ব্যয়বহুল নগর হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
এই তালিকা প্রণয়নে মার্সার দুই শতাধিক পণ্য ও সেবার তুলনামূলক ব্যয় পর্যালোচনা করেছে, যেমন বাড়ির দাম, যাতায়াত, খাদ্য, পোশাক ও গৃহস্থালি পণ্যের দাম। ২২৬টি শহর নিয়ে এই ক্রমতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।