লোহিত সাগর পথে আবার জাহাজ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্বের বৃহৎ জাহাজ কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি। জাহাজ কোম্পানি মায়ার্সক জানিয়েছে, কিছুদিন বন্ধ থাকার পর লোহিত সাগরে তারা আবার জাহাজ চালানো শুরু করবে। মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বহুজাতিক নৌ টহল দল লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের ঠেকানোর লক্ষ্যে কাজ শুরু করায় মায়ার্সক এ পথে জাহাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এপি বা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সূত্রে টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর দিয়েছে। গত এক মাসে লোহিত সাগর পথে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলার কারণে বিশ্বের বড় জাহাজ কোম্পানিগুলো সুয়েজ খাল ও লোহিত সাগরপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। এশিয়া ও ইউরোপের সংযোগস্থল হিসেবে পরিচিত এই পথে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, শস্য ও ভোগ্যপণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়।
বিবৃতিতে মায়ার্সক বলে, ‘আমাদের কাছে খবর এসেছে যে এই মাল্টিন্যাশনাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভস বা বহুপক্ষীয় নিরাপত্তা উদ্যোগ “অপারেশন প্রসপারিটি গার্ডিয়ান” এখন কার্যকর হয়েছে। ফলে লোহিত সাগর ও সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচলের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’
মায়ার্সক বলে, প্রথম জাহাজটি চালানোর জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে এবং যত দ্রুত তা করা সম্ভব, তত দ্রুত তা করা হবে।
ইরানের সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৪ সালে ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে নেয়। এর পর থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিরুদ্ধে তাদের তীব্র লড়াই চলছে। এর আগেও হুতিরা এই অঞ্চলে জাহাজে হামলা চালিয়েছে, কিন্তু এবার গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর বাণিজ্যিক জাহাজে তাদের হামলা অনেকটা বেড়ে গেছে।
ইসরায়েলগামী বা ইসরায়েল থেকে ছেড়ে আসা যেকোনো জাহাজে হামলা করার হুমকি দিয়েছে হুতি বিদ্রোহীরা। সেই হুমকি কার্যত বিদেশি যেকোনো জাহাজের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে কনটেইনারবাহী জাহাজ থেকে শুরু করে তেলের ট্যাংকার পর্যন্ত। জাহাজে নরওয়ে বা লাইবেরিয়ার মতো দেশের পতাকা থাকলেও সেগুলোয় হামলা করা হচ্ছে কিংবা মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে।
এই বাস্তবতায় মায়ার্সকসহ বিশ্বের সব বড় জাহাজ কোম্পানি লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে জাহাজ চালাচ্ছিল। এতে জাহাজ চলাচলের সময় বেড়ে যাওয়ায় বিমা ও জ্বালানি খরচ বেড়ে গেছে।
গত শনিবার মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে ছোড়া চারটি ড্রোন ধ্বংস করেছে। নরওয়ের পতাকাবাহী রাসায়নিক ও তেলবাহী ট্যাংকার অল্পের জন্য হামলা থেকে বেঁচে গেছে; অন্যদিকে ভারতের পতাকাবাহী ট্যাংকারে গোলা পড়লেও হতাহতের খবর আসেনি। গত ১৭ অক্টোবরের পর এটি হুতি বিদ্রোহীদের পঞ্চদশ হামলা ছিল বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড।