সুইজারল্যান্ডের বিলাসী ঘড়ি নির্মাতা সোয়াচ গ্রুপের মুনাফায় মারাত্মক ধস নেমেছে। চীনের বাজারে বছরের প্রথমার্ধে দামি ঘড়ি বিক্রি কমে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোম্পানিটি সতর্ক করে বলেছে যে বছরের বাকি সময়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ এই বাজারে বিক্রি পরিস্থিতি ভালো হবে এমন আশা করা হচ্ছে না।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সোয়াচের মুনাফা সাড়ে ৭০ শতাংশ পড়ে গেছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ সময়ে ঘড়ি কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ১৪ কোটি ৭০ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা ১৬ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ। অন্যদিকে বিক্রি কমেছে ১৪ শতাংশ। এ সময়ে বিক্রি থেকে তাদের আয় হয়েছে ৩৪০ কোটি সুইস ফ্রাঁ।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, উজ্জ্বল নানা রঙের প্লাস্টিকের ঘড়ি তৈরি করায় সোয়াচের পরিচিতি রয়েছে। বেশ কয়েকটি দামি ঘড়ি তৈরি করে সোয়াচ, যেমন লনজিন, ওমেগা ও টিসট। কোম্পানিটি জানিয়েছে, দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ির চাহিদা কমে যাওয়ার কারণেই মুনাফায় ধস নেমেছে।
চাহিদা সবচেয়ে বেশি কমেছে চীনে। সোয়াচ জানায়, দেশটিতে বিলাসী পণ্যের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার কারণেই বিক্রি কমেছে। চাহিদা একই সঙ্গে হংকং ও ম্যাকাও অঞ্চলেও। বিশ্লেষকেরা ধারণা করেছিলেন যে কোম্পানিটি ছয় মাসে ৩৫ কোটি ৪০ লাখ ফ্রাঁ মুনাফা করবে। এই খবরে সোয়াচের শেয়ারের দাম ৯ শতাংশের বেশি পড়ে গেছে।
বার্নস্টেইনের বিশ্লেষক লুকা সোলকা ক্রেতাদের কাছে পাঠানো এক নোটে বলেন, সোয়াচ গ্রুপের পণ্যের মূল ক্রেতা চীনের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা। এই গোষ্ঠী এখন খারাপ সময় পার করছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপই হচ্ছে। এই পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি টের পাচ্ছে বিলাস পণ্য প্রস্তুতকারকেরা। আরেক দামি পণ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানি বারবেরি খারাপ আর্থিক তথ্য পেয়েছে মূলত চীনে ভালো না করার কারণে। ফলে কোম্পানিটি আজ সোমবার তাদের প্রধান নির্বাহীকে সরিয়ে দিয়েছে।
ভালো ব্যবসা না হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সোয়াচ জানিয়েছে যে তারা কর্মী কাটছাঁট করবে না; বরং বাজারে পণ্যের চাহিদা আবার বাড়বে এ প্রত্যাশায় তারা তাদের উৎপাদন সক্ষমতা ধরে রাখবে। কোম্পানিটি বলেছে, খরচ কমানোর জন্য অন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা বছরের দ্বিতীয় ভাগে ফল দেবে।
তবে চীনের বাজার চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত বিলাসী পণ্যের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং থাকবে বলে সোয়াচ মনে করে। কোম্পানিটি বলেছে, চীনের বাজারের সম্ভাবনা অবশ্য অপরিবর্তিত থাকবে। কম দামের পণ্যের ক্ষেত্রে চীনের বাজারে বিক্রি প্রবৃদ্ধি ও বাজার হিস্যা বাড়াতে ভালো সুযোগ রয়েছে।
সোয়াচ ব্র্যান্ডের ঘড়ি বিক্রির বিষয়টি উল্লেখ করে কোম্পানিটি জানিয়েছে, চীনে এই ব্র্যান্ডের ঘড়ি বিক্রি ১০ শতাংশ বেড়েছে।