নভেম্বর মাসে ভারতে খুচরা মূল্যস্ফীতির হার কমায় স্বস্তি ফিরেছে দেশটির নীতিনির্ধারকদের মনে। গত মাসে দেশটিতে পণ্যের খুচরা মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির হার রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) স্বস্তিকর সীমা ২ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে আছে।
অক্টোবর মাসে ভারতের মূল্যস্ফীতির হার ১৪ মাসের সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ২১ শতাংশে ওঠে। এরপর নভেম্বরে তা সাড়ে ৫ শতাংশের মধ্যে নেমে এল। এতে অবশ্য বোঝা যায়, বাজারে জিনিসপত্রের দাম এখনো খুব একটা কমেনি। খবর ইকোনমিক টাইমসের
ভারতের সরকারি তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি। গ্রামে যেখানে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ, সেখানে শহরাঞ্চলে পণ্যের খুচরা মূল্যস্ফীতি কমে ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার বেশি থাকার অর্থ, স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে অতটা স্বস্তি আসেনি। মধ্য মেয়াদে খুচরা মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা আরবিআইয়ের লক্ষ্য।
নভেম্বরে যথারীতি খাদ্য মূল্যস্ফীতি ওপরের দিকেই ছিল। অক্টোবর মাসের ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশের তুলনায় কমে গত মাসে ৯ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশে নেমে এলেও তাতে মানুষের খুব একটা সুবিধা হয়নি। মূলত সবজি, ফল, তেল ও স্নেহজাতীয় পণ্যের দর বেশি থাকার কারণেই নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি বেশি হয়েছে। নভেম্বরে ভারতে আবাসনের দাম অক্টোবরের তুলনায় বেড়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে ভারতে খুচরা মূল্যস্ফীতির হার ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশে ওঠে। এরপর নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে আরবিআই। সেই সঙ্গে সরকার পণ্যের সরবরাহব্যবস্থা উন্নত করে—এই দুটির সম্মিলিত প্রভাবে বাজারে পণ্যের দাম কমে। অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার বেশি থাকায় উৎসব মৌসুমের বেচাকেনায় তার প্রভাব পড়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের মূল্যস্ফীতির হার আরও সহনীয় হবে বলে ব্যাংক অব বারোদার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থবছরের বাকি সময়ে এই সূচক ৪ দশমিক ৭ থেকে ৪ দশমিক ৮ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে বলে মনে করছে ব্যাংকটি। শীতকালের সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। ফলে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কমছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দামে স্থিতিশীলতা এসেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।