চীনের জাতীয় পতাকা
চীনের জাতীয় পতাকা

চীনের প্রথম প্রান্তিকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়েছে

বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে চীনের। বিভিন্ন কারণে চীনের অর্থনীতির গতি কমেছে। এই শ্লথগতি কাটাতে দেশটির সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেওয়ার পর ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ফলে এই খবর তাদের জন্য স্বস্তি নিয়ে এসেছে।

চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যানুসারে, বছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। যদিও বিশ্লেষকদের নিয়ে করা রয়টার্সের জরিপে তাঁরা ৪ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করেছিলেন। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

রয়টার্সের খবরে আরও জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২ সালের শেষভাগে কোভিডজনিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর পরের বছর প্রবৃদ্ধির এই হার তেমন একটা বেশি ছিল না। ২০২৪ সালের জন্য দেশটির নীতিপ্রণেতারা যখন ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন, তখন বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন যে এটা উচ্চাভিলাষী। তবে বছরের প্রথম প্রান্তিকে তার চেয়েও বেশি হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করল চীন।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এসএমবিসির এশিয়া অঞ্চলের সামষ্টিক কৌশল বিভাগের প্রধান জেফ ইং রয়টার্সকে বলেন, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধির এই হার ইতিবাচক। মনে হচ্ছে, প্রবৃদ্ধির গতি এখন স্থিতিশীল; অর্থাৎ এই পরিসংখ্যান যে প্রত্যাশাতীত, সেটা বিস্ময়কর নয়।

জেফ ইং আরও বলেন, তবে চীনের অর্থনীতিবিষয়ক মনোভাব এখনো অনেকটা নেতিবাচক। তাঁর মতে, চলতি বছরের শেষ দিকে এই মনোভাব কেটে যেতে পারে, তখন মানুষের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হতে পারে।

এদিকে আগের প্রান্তিকের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি বেড়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, যদিও পূর্বাভাস ছিল ১ দশমিক ৪ শতাংশের।

কোভিডের প্রথম দিকে বিশ্বের সব দেশের অর্থনীতি সংকুচিত হলেও চীন ভালো করেছিল। কিন্তু ২০২২ সালের শেষভাগ পর্যন্ত বিধিনিষেধ চালিয়ে যাওয়াসহ অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত নানা সংকটে চীন পরবর্তীকালে সেই ধারা বজায় রাখতে পারেনি। দেশটির জিডিপির ৩০ শতাংশ আসে আবাসন খাত থেকে; সেই আবাসন খাতে চলছে চরম সংকট। বেশ কয়েকটি বড় আবাসন কোম্পানি ঋণখেলাপি হয়ে গেছে। দেশটির স্থানীয় সরকারের ঋণ বেড়ে যাওয়া ও ব্যক্তিপর্যায়ের ভোগ কমে যাওয়ার কারণেও এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

রয়টার্সের আরেক সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছর ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চীন বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে। মূলত উন্নয়ন মডেলের রূপান্তর, শিল্পের অতি সক্ষমতারোধ, সম্পত্তি খাতের ঝুঁকি হ্রাস করা ও স্থানীয় সরকারের অপচয় কমাতে কাজ করছে দেশটির সরকার।

সরকারি পরিসংখ্যানে গত বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হয়নি। ২০২৩ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। আগের বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালেও ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু বিশ্লেষকেরা মনে করেন, চীনের জন্য এটা যথেষ্ট নয়।