লোহিত সাগর এড়িয়ে চলছে বিলাসবহুল জাহাজ
লোহিত সাগর এড়িয়ে চলছে বিলাসবহুল জাহাজ

এবার লোহিত সাগর এড়িয়ে চলছে কিছু বিলাসবহুল জাহাজ

লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলার জেরে যাত্রীবাহী ক্রুজ জাহাজগুলো এ পথ এড়িয়ে চলতে শুরু করেছে। জাহাজগুলো এখন গতিপথ বদল করে ভিন্ন পথে চলাচল করছে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে। অনেক জাহাজের যাত্রাও বাতিল করা হয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে ক্রুজ জাহাজশিল্পে এর খুব একটা প্রভাব পড়বে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত নভেম্বর থেকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরপথে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা করছে। এতে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য কমে গেছে। হুতি বিদ্রোহীরা ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে এ হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে। তাদের এ হামলার কারণে ইসরায়েল ও হামাসের সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্রুজ জাহাজ পরিচালনা কোম্পানি রয়্যাল ক্যারিবিয়ান গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ইতিমধ্যে তাদের দুটি জাহাজ চলাচল বাতিল করা হয়েছে। জাহাজ দুটি হচ্ছে মাসকট থেকে দুবাইগামী একটি জাহাজ, যার যাত্রার সময় ছিল ১৬ থেকে ২৬ জানুয়ারি। আরেকটি হচ্ছে দুবাই থেকে মুম্বাইগামী জাহাজ, যার যাত্রার সময় ছিল ২৬ জানুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি।

শুধু তা–ই নয়, গত সপ্তাহে তারা আরেকটি জাহাজের গতিপথ বদলে দেয়—আকাবা থেকে মাসকটগামী একটি ক্রুজ জাহাজের যাত্রীদের গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের কাছাকাছি একটি বন্দরে নামিয়ে দেওয়া হয়।

রয়্যাল ক্যারিবিয়ান বলেছে, ‘আমাদের বৈশ্বিক নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি খুবই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এরপর যদি গতিপথ আরও পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, আমরা তা করব।’

ইতালিয়ান জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা এমএসসি ক্রুজেস বুধবার বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইউরোপগামী তিনটি জাহাজ বাতিল করা হয়েছে। তারা বলেছে, যাত্রী ও জাহাজকর্মীদের নিরাপত্তাই প্রথম অগ্রাধিকার। সে জন্য তারা সংক্ষুব্ধ অঞ্চল এড়িয়ে নিরাপদ যাত্রার পক্ষপাতী।

প্রযুক্তিভিত্তিক ট্রাভেল এজেন্সি ক্রুজ ভ্যাকেশন আউটলেটের প্রধান নির্বাহী টড এলিয়ট রয়টার্সকে বলেছেন, জাহাজ বাতিল করা বা যাত্রাপথ পরিবর্তনের কারণে হাজার হাজার যাত্রীর ওপর প্রভাব পড়বে। তারপরও তিনি মনে করছেন না, বৈশ্বিক পর্যায়ে ক্রুজ জাহাজ পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলো তেমন একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

টড এলিয়ট আরও বলেন, ক্রুজ কোম্পানিগুলোর বহরে অনেক জাহাজ আছে, অর্থাৎ যে কটি জাহাজের গতিপথ বদল করা হয়েছে বা বাতিল করা হয়েছে, সেগুলো মোট বহরের তুলনায় খুবই সামান্য। সে জন্য কোম্পানিগুলো সহজেই এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে।

ইতালির কস্টা ক্রুজ গত বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেছে, তাদের জাহাজের পথ বদলায়নি, কেবল মার্চ–এপ্রিলে তাদের দুটি ক্রুজের গতিপথ পরিবর্তিত হতে পারে।

এদিকে কার্নিভ্যাল বলেছে, তাদের বৈশ্বিক নিরাপত্তা বাহিনী নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। তারা বলছে, যাত্রীদের নিরাপত্তাই প্রথম অগ্রাধিকার, এর প্রয়োজনে গতিপথ বদলাতে হলে তা করা হবে।