ডেনমার্কে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলবিরোধী যে বিক্ষোভ করছেন, তাতে তাঁরা কিছুটা সাফল্য পেয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইসরায়েলের সঙ্গে আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করুক। এবার ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেন বলেছে, দখলকৃত পশ্চিম তীরে ব্যবসা করে, এমন কোম্পানিতে তারা বিনিয়োগ বন্ধ করবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে মে মাসের গোড়ার দিকে শত শত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশেই ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস হামলা চালানোর পর ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করে।
ইসরায়েলের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, ওই দিন হামাস ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এরপর ইসরায়েল আক্রমণ চালিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৬ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেনের শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন যে ইসরায়েলের সঙ্গে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কার্যক্রম ছিন্ন করুক। এ ছাড়া ফিলিস্তিনি যেসব এলাকা ইসরায়েলের দখলে রয়েছে, সেখানে কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের জন্যও শিক্ষার্থীরা দাবি জানান।
ফিলিস্তিনি এলাকা পশ্চিম তীর এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেন জানিয়েছে, তারা তিনটি কোম্পানিতে থাকা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮১০ মার্কিন ডলার সমমূল্যের ১০ লাখ ড্যানিশ ক্রাউন বিনিয়োগ প্রত্যাহার করবে। এই তিন কোম্পানি হলো এয়ারবিএনবি, বুকিং ডটকম ও ইড্রিমস।
বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, তাদের বিনিয়োগের ব্যবস্থাপনার জন্য তারা তহবিল ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কাজ করবে। পশ্চিম তীরের অবৈধ ইসরায়েলি বসতিতে যেসব কোম্পানি কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জাতিসংঘের তালিকায় উল্লেখ আছে, সেই তালিকা মেনে চলার বিষয়টি তারা নিশ্চিত করবে বলেও ইউনিভার্সিটি অব কোপেনহেগেন জানিয়েছে।
ডেনমার্কের এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর এক হাজার কোটি ড্যানিশ ক্রাউন আয় করে থাকে। এই অর্থের একটি অংশ তারা বিভিন্ন বন্ড ও ইকুইটিতে বিনিয়োগ করে।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা ভূখণ্ড দখল করে নেয়। ওই যুদ্ধ হয়েছিল ইসরায়েল ও পার্শ্ববর্তী আরব দেশগুলোর মধ্যে।