বছর ঘুরে আবার আসছে বড়দিন। গত দুই বছর বড়দিনের আগে মূল শঙ্কা ছিল করোনাভাইরাস। অর্থাৎ ভাইরাসের প্রকোপের কারণে মানুষ কতটা কেনাকাটা করতে বেরোবেন বা কত অর্থ ব্যয় করবেন। এবারের শঙ্কার জায়গা হলো, জ্বালানির উচ্চমূল্যজনিত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ কেনাকাটা করতে কতটা আগ্রহী হবেন।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান–এর প্রতিবেদন অনুসারে এবার বেচাকেনায় প্রবৃদ্ধি হলেও শেষমেশ খুব বেশি বেচাকেনা হবে না।
যুক্তরাজ্যের তথ্য বিশ্লেষণকারী কোম্পানি স্প্রিংবোর্ডের পূর্বাভাস, এবার দেশটির হাই স্ট্রিট, অর্থাৎ সাধারণ বিপণিবিতানগুলোয় ক্রেতার সংখ্যা গত বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তে পারে। এ ছাড়া রিটেইল পার্ক শহরের বাইরের বিপণিবিতানগুলোয় ৫ শতাংশ আর শহরের বড় বিপণিবিতানগুলোয় ক্রেতার সংখ্যা ১০ শতাংশ বাড়তে পারে। এই প্রবৃদ্ধির হার গত বছরের চেয়ে কম।
এদিকে বড়দিনের সপ্তাহ শুরুর আগেই যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতারা বলেছেন, বেচাকেনা ভালো নয়। এদিকে দেশটির অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যানুসারে, নভেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রয় শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমে গেছে; যদিও পূর্বাভাস ছিল, খুচরা বিক্রয় কমবে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।
আশা ছিল, ডিসেম্বর মাসে বেচাকেনা বেড়ে গেলে নভেম্বর মাসের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যাবে। কিন্তু বিক্রেতাদের সে আশার গুড়ে বালি। ডিসেম্বর মাসে শীত বেড়ে যাওয়া এবং রেলশ্রমিকদের অবরোধের কারণে বেচাকেনা তেমন একটা বাড়েনি। এ ছাড়া আরও একটি ধর্মঘট আছে সামনে। বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় দেশটির নেটওয়ার্ক রেলকর্মীরা ধর্মঘটে যাচ্ছেন।
এদিকে অনলাইন বেচাকেনাও মার খাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের ১ লাখ ১৫ হাজার রয়্যাল মেইল কর্মী আগামী শুক্রবার থেকে বেতন বৃদ্ধিসহ কর্মপরিবেশ উন্নয়নের দাবিতে ধর্মঘটে যাচ্ছেন।
বিশ্লেষকদের দাবি, নভেম্বর মাসে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণেই মানুষের বেচাকেনা কমেছে। জানা গেছে, নভেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের বেচাকেনা অর্থমূল্যে ১৪ শতাংশ বাড়লেও পরিমাণের দিক থেকে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান গন্তব্য ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র। তাই এসব দেশের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির অর্থ হলো দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়া।