এক বছরে এক লাখ কোটি বা এক ট্রিলিয়ন ডলার বাজার মূলধন হারিয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে লেনদেন শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বা বাজারমূল্য কমে দুই লাখ কোটি বা দুই ট্রিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্বের প্রথম প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে ২০২১ সালে অ্যাপলের বাজার মূলধন বেড়ে তিন লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওই বছর প্রযুক্তি খাতের তালিকাভুক্ত প্রথম কোম্পানি হিসেবে অ্যাপলের বাজার মূলধন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গিয়েছিল। মূলত শেয়ারবাজারে শেয়ারের দাম বাড়লে তাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধনও বেড়ে যায়। আর শেয়ারের দাম কমলে তাতে বাজার মূলধন কমে যায়। সদ্যবিদায়ী ২০২২ সালে অ্যাপলের শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় বড় অঙ্কের বাজার মূলধন হারায় কোম্পানিটি।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল এক দিনেই অ্যাপলের শেয়ারের দাম ৪ শতাংশ কমেছে। এদিকে জাপানভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক–বিষয়ক সংবাদমাধ্যম নিক্কিই জানিয়েছে, অ্যাপলের বিভিন্ন জনপ্রিয় পণ্য, যেমন অ্যাপল ওয়াচ, এয়ারপডস, ম্যাকবুক যারা সরবরাহ করে, সেসব সরবরাহকারীকে কম যন্ত্রাংশ তৈরির নির্দেশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাতে বোঝা যাচ্ছে, অ্যাপলের জনপ্রিয় এসব পণ্যের চাহিদা কম থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে অ্যাপলের বক্তব্য জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটি এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রযুক্তি খাতের অন্যান্য কোম্পানির মতো অ্যাপলও বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কায় শঙ্কিত। তারা ধারণা করছে, মন্দার কারণে ভোক্তা চাহিদা কমে যেতে পারে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেলে মানুষ আইফোনের মতো দামি পণ্য কেনা কমিয়ে দেবে। যদিও সাম্প্রতিক সময় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ছুটির আগে অ্যাপল জানিয়েছিল, আইফোন ১৪ প্রো ও আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্সের মতো নতুন ফোনের ব্যাপক চাহিদা দেখছে তারা। তবে করোনার কারণে চীনে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এসব ফোনের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। অবশ্য চীনে অ্যাপলের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোয় এখন পূর্ণ মাত্রায় আবার উৎপাদন শুরু হয়েছে।
এক বছরে অ্যাপল এক ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার মূল্য হারালেও তার চেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা ছিল প্রযুক্তি খাতের অন্যান্য কোম্পানিগুলোর। এর মধ্যে গত বছর অ্যামাজনের শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মূল মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটার শেয়ারের দাম ৬৩ শতাংশের মতো কমেছে। সেখানে গত এক বছরে অ্যাপলের শেয়ারের দাম কমেছে ৩১ শতাংশ। সেই হিসাবে অ্যামাজন ও ফেসবুকের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে অ্যাপলের শেয়ার।