আজ বুধবার সকালে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ারবাজারে সূচকের পতন হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিটে সূচক পতনের জেরসহ আরও বেশ কিছু কারণে এশিয়ায় শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বন্ডের সুদহার চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং দ্বিতীয়ত, বিশ্বের চিপ শিল্পের অন্যতম কেন্দ্র তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের কারণে সেখানকার অর্থনীতিতে যে বিঘ্ন সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তার কারণেও এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহার তেমন একটা কমবে না বলে আশঙ্কা করছে বাজার। সেই সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল জনসমক্ষে এসেছেন, এই ঘটনাও বাজারে একধরনের প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে তেলের দাম বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে এবং সোনার দাম আবারও রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে।
জাপানবহির্ভূত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বড় সূচক এমএসসিআই আজ সকালে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ পড়েছে; জাপানের নিক্কি সূচক পড়েছে ১ শতাংশ, যদিও বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই সূচকের ২০ শতাংশ উত্থান হয়েছিল।
শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর তাইওয়ানের শেয়ার সূচক টিডব্লিউআইআইয়ের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। দেশটিতে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। এমনকি ভূমিকম্পের জেরে দক্ষিণ জাপান ও ফিলিপাইন দ্বীপের জন্য সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ভূমিকম্পের পর তাইওয়ানের বড় চিপ কোম্পানি তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শেয়ারের দামে ১ দশমিক ৪ শতাংশ পতন হয়েছে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর তাদের কিছু কারখানা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া চীনের ব্লু চিপসের শেয়ারের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ; হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। যদিও এক বেসরকারি জরিপে দেখা গেছে, মার্চে হংকংয়ের সেবা খাতের সম্প্রসারণ হয়েছে।
এদিকে ওয়াল স্ট্রিটে নীতি সুদহার হ্রাসের বিষয়ে একধরনের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাত ও শ্রমবাজার থেকে যে ইতিবাচক পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ফেডারেল রিজার্ভ চলতি ও আগামী বছর নীতি সুদহার কতটা কমাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল ফেডারেল রিজার্ভের দুজন কর্মকর্তা বলেছেন, চলতি বছর অন্তত তিনবার নীতি সুদহার কমানোর মতো পরিস্থিতি আছে। কিন্তু বাজার মনে করছে, নীতি সুদহার মাত্র ৬৯ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো হতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, চলতি বছর তিনবার নীতি সুদহার কমানোর কথা থাকলেও পরিসংখ্যানে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে শেষ পর্যন্ত দুবার কমানো হতে পারে।
এদিকে গতকাল ওয়াল স্ট্রিটের তিন সূচকেরও পতন হয়েছে। ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও নাসডাক কম্পোজিটের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ পর্যন্ত।
ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলার শেয়ারের দরপতন হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠার পর কিছুটা কমেছে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ৪ দশমিক ৪০ শতাংশে উঠে গিয়েছিল, যদিও পরে তা ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশে নেমে আসে।