বিএমডব্লিউ, জাগুয়ার, ল্যান্ড রোভার ও ভক্সওয়াগনের মতো গাড়িতে নিষিদ্ধ চীনা কোম্পানির তৈরি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের এক প্রতিবেদনে এই অভিযোগ করা হয়েছে।
বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, বিএমডব্লিউর ৮ হাজার মিনি কুপার গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা হয়েছে, যেগুলোয় নিষিদ্ধ চীনের কোম্পানি সিচুয়ান জিঙ্গুয়েইদা টেকনোলিজ গ্রুপের (জেডব্লিউডি) তৈরি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। সিনেট ফাইন্যান্স কোম্পানির এক প্রতিবেদনে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর ও কমিটির চেয়ারম্যান রন ওয়াইডেন বলেন, গাড়ি কোম্পানিগুলোর নিজস্ব নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা পরিষ্কারভাবেই কাজ করছে না। তবে বিবিসির পক্ষ থেকে এই তিন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে চায়নি।
রন ওয়াইডেন ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার সিকিউরিটি এজেন্সিকে এসব ক্ষেত্রে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কথা হলো, চীনের যেসব কোম্পানি জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহার করে এসব পণ্য উৎপাদন করছে, তাদের উৎপাদিত পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবে না। চীনের কোম্পানিগুলোর এই জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহারের বিষয়টিকে তিনি লজ্জাজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার এমন কিছু যন্ত্রাংশ আমদানি করেছে, যেখানে জেডব্লিউডি নামের এক কোম্পানির তৈরি উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে; এই জেডব্লিউডি নিষিদ্ধ কোম্পানি হিসেবে তালিকাভুক্ত। আরও বলা হয়েছে, জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার সেসব যন্ত্রাংশ চিহ্নিত করতে পেরেছে এবং জেডব্লিউডির উপাদানে তৈরি যন্ত্রাংশ ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভক্সওয়াগন জানায়, তাদের পোরশে ও বেন্টলি সিরিজের কিছু গাড়ি কর্তৃপক্ষ বাজারে নামাতে দেয়নি। অভিযোগ, এসব গাড়িতে কিছু যন্ত্রাংশ আছে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জোরপূর্বক শ্রম নিরোধ আইন লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভক্সওয়াগন নিজে থেকে কর্তৃপক্ষকে এ বিষয় সম্পর্কে অবগত করেছে। মার্কিন কংগ্রেস ২০২১ সালে উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএফএলপিএ) পাস করে। এ আইন করার উদ্দেশ্য হলো, চীনের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে শ্রম দিতে বাধ্য করে যেসব পণ্য তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো যেন যুক্তরাষ্ট্রে না আসে।
চীনের জেডব্লিউডি কোম্পানিকে ইউএফএলপিএতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। এর অর্থ হলো, এই কোম্পানির পণ্য জোরপূর্বক শ্রমে তৈরি করা হয়েছে বলে মার্কিন প্রশাসন মনে করে।
চীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উইঘুর সম্প্রদায়ের ১০ লাখের বেশি মানুষকে বন্দী করে রাখা হয়েছে এবং তাঁদের জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে। যদিও চীনের কর্তৃপক্ষ বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।