>
- যুবরাজ বলেছিলেন, সৌদি আরব সহিষ্ণুতার পথে হাঁটবে
- যুবরাজের কথায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হয়েছিলেন
- এক বছর পর ভিন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে
- খাসোগি নিখোঁজে সৌদি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা
- সৌদি যে তেলনির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে চেয়েছিল, তা হুমকির মুখে
এক বছর আগে রিয়াদে সাড়ে তিন হাজার ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে রাজতন্ত্রটির সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষণা করেন, ব্যবসা–বাণিজ্যের জন্য সৌদি আরবের দরজা খোলা। রাজতন্ত্রটি তখন ৫০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে একটি বড় শহর নির্মাণের পরিকল্পনা প্রকাশ করে। এ নিয়ে তখন বেশ সাজ সাজ রব পড়ে যায়।
যুবরাজ সালমান তখন বড় বড় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এই বলে আশ্বস্ত করেন, সৌদি আরব সহিষ্ণুতার পথে হাঁটবে। পৃথিবীর সঙ্গে নতুন বন্দোবস্তে যাবে তারা।
তখন কলোনি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টম বারাক বেশ আশ্বস্ত হয়েছিলেন। সেই সময় সিএনএনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, সৌদি সরকার ‘স্বচ্ছ, নিরাপদ, স্থিতিশীল ও বোধগম্য পরিবেশ’ তৈরিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
আজ এক বছর পর ভিন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশটির সাংবাদিক জামাল খাসোগির অন্তর্ধানের ঘটনায় ব্যবসায়ী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা সৌদি আরব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে সৌদি আরব যে তেলনির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে চেয়েছিল, তা এখন হুমকির মুখে।
তুরস্ক দাবি করছে, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সৌদি সাংবাদিক ও ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলামিস্ট খাসোগি তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে খুন হয়েছেন। যদিও সৌদি আরব খুব জোর গলায় এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
সৌদি আরবের প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও এই ঘটনায় বড় বড় ব্যবসায়ী সালমানের আধুনিক অর্থনীতি নির্মাণের প্রকল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ব্রিটিশ ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন ইতিমধ্যে লোহিতসাগরকেন্দ্রিক পর্যটনবিষয়ক দুটি প্রকল্প থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, মহাশূন্যবিষয়ক কোম্পানিতে ১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে তাঁর যে আলোচনা চলছিল, তা থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, সৌদি আরবের ‘এই সরকার নিয়ে উচ্চাশা ছিল...উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়েও উচ্চাশা ছিল। তুরস্কে যা ঘটেছে শোনা যাচ্ছে তা যদি সত্য হয়, তাহলে আমাদের পশ্চিমাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হবে।’
বিন সালমানের ভিশন ২০৩০–এর প্রথম উদ্যোগ ছিল পরিবেশের ক্ষতি না করে লোহিতসাগরের ১০০ মাইল লম্বা উপকূল তটের উন্নয়ন করা। সৌদি আরবের তেলনির্ভরতা কমাতেই এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।