রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি কমবে

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)। এবার সংস্থাটি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। বিবিসিকে এই কথা জানিয়েছেন ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো ইওয়েলা। মধ্যম মেয়াদে বিশ্বে মূল্যস্ফীতির চাপ অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক বলেন, ‘করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহব্যবস্থায় যে সংকট দেখা দিয়েছিল, তা চলমান থাকবে। খাদ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় খাদ্যপণ্যের দাম আরও বাড়বে। আমাদের খাদ্যপণ্যসংকটের সময় ঘনিয়ে এসেছে, যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্ববাজারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ খাদ্যপণ্য রপ্তানি করে থাকে।’

এনগোজি ওকোনজো বলেন, ‘আমাদের প্রথম দুশ্চিন্তা হচ্ছে ইউক্রেনীয়দের নিয়ে, যারা কিনা যুদ্ধের ফলে গৃহহীন হচ্ছে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার পাচ্ছে না। রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাতের ফলে গম ও ভুট্টার মতো বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ বিশ্ব অর্থনীতি এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য সরবরাহের সংকট ও সীমাবদ্ধতার প্রভাবে গরিব দেশগুলো ব্যাপকভাবে ভুগবে।

এদিকে গ্লোবাল এস অ্যান্ড পির তথ্যমতে, সূর্যমুখী তেলের বৈশ্বিক রপ্তানির ৪৬ দশমিক ৯ শতাংশ আসে ইউক্রেন থেকে ও ২৯ দশমিক ৯ শতাংশ রাশিয়া থেকে। ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) সূর্যমুখী তেলের সংকট দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের বন্দরগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সূর্যমুখী তেল রপ্তানিতে দেশটি বিপাকে পড়েছে।

আফ্রিকার প্রসঙ্গ টেনে নাইজেরিয়ার সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আফ্রিকার ৫৫টি দেশের মধ্যে ৩৫টিই রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গমসহ অন্য খাদ্যশস্য আমদানি করে। আর ২২টি দেশ সার আমদানি করে থাকে।

আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে ওই মহাদেশের বিভিন্ন দেশে খাদ্যমূল্য ২০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

সরবরাহ–সংকট সমাধানের আশাও দেখিয়েছেন ডব্লিউটিওর প্রধান এনগোজি ওকোনজো ইওয়েলা। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর পাশাপাশি আফ্রিকার দেশগুলো তাপমাত্রাসহিষ্ণু গম ও অন্যান্য শস্য উৎপাদনে বিনিয়োগ করছে বলে বিবিসিকে জানান তিনি।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগেই করোনার কারণে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যপণ্যের সরবরাহ হয়নি। যে কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। তখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমে যাবে বলে সতর্ক করেছিল।