রাশিয়ার হামলার শিকার ইউক্রেনে হঠাৎ প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বেড়ে গেছে। আর এ আয় সবচেয়ে বেশি আসছে ইউক্রেনের পাশের দেশ পোল্যান্ড থেকে। যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের বিপুলসংখ্যক নাগরিক পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া আগে থেকেই ইউক্রেনের বিপুলসংখ্যক নাগরিক প্রবাসী হিসেবে পোল্যান্ডে রয়েছেন। যুদ্ধ শুরুর পর তাঁরাই নিজ দেশে (ইউক্রেনে বসবাসকারী) পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। কারণ, যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনে নাগরিকেরা চাকরি-বাকরি ও আয়রোজগার নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন।
বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি বছর ইউক্রেনে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ২০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে। গতকাল বুধবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বেড়েছে। এর ফলে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রবাসী আয় গ্রহণকারী দেশ হতে যাচ্ছে ইউক্রেন।
গত বছরে অভিবাসী কর্মীদের কাছ থেকে ইউক্রেন প্রায় ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স পেয়েছিল, যার বড় অংশই এসেছে পোল্যান্ড থেকে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর সবচেয়ে বেশি শরণার্থীও গেছে পোল্যান্ডে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে প্রবাসী আয় বাড়লেও মধ্য এশিয়ার অনেক দেশে এ বছর প্রবাসী আয় অনেক কমে যাবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংক বলছে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর প্রবাসী আয়ের প্রধান উৎস রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনে হামলার কারণে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। ফলে রাশিয়ায় কর্মরত মধ্য এশিয়ার অনেক নাগরিক চাকরি হারিয়েছেন। আবার আন্তর্জাতিক অর্থ লেনদেন মাধ্যমে অবরোধের কারণেও প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, খাদ্য, সার ও তেলের দামে ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি এমনিতেই মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে খারাপ অবস্থায় ফেলেছে। সেই সঙ্গে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমে গেলে এসব দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্যের ঝুঁকি বাড়তে পারে।