রেস্তোরাঁ, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে এখন পণ্য সরবরাহের অন্যতম প্যাকেজিং ব্যবস্থা হলো প্লাস্টিক। তবে এই ব্যবহার বহুদিন ধরেই কমিয়ে আনতে চাইছে চীন। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা খুচরা বিক্রেতাদের প্লাস্টিকের ব্যবহারের রিপোর্ট দেওয়ার জন্য একটি দেশব্যাপী ব্যবস্থা তৈরি করেছে। রেস্তোরাঁ, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এবং সরবরাহ পরিষেবাগুলোকে প্রতিবেদন দিতে হবে যে তারা কী পরিমাণ একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যবহার করেছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য সমস্যা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে চীন। মূলত কিছুদিন ধরে হোম ফুড ডেলিভারি সেবা বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা আরও বেড়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরে মন্ত্রণালয় জানায়, বছরের শেষের দিকে বড় শহরগুলো থেকে একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ব্যাগ এবং খাওয়ার পাত্র নিষিদ্ধ করা হবে এবং একবার ব্যবহৃত স্ট্র দেশব্যাপী নিষিদ্ধ করা হবে। এ ছাড়া ওই মাসেই একটি নতুন ‘কঠিন বর্জ্য আইন’ কার্যকর হয়েছিল। যারা নিয়ম ভঙ্গ করবে, তাদের জন্য বড় অঙ্কের জরিমানা বিধান করা হয়। নতুন আইন পুনর্ব্যবহারযোগ্য নতুন অবকাঠামো নির্মাণও বাধ্যতামূলক করে।
চীন স্ক্র্যাপ প্লাস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ওয়াং ওয়াং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এসব নিষেধাজ্ঞা ‘দৃশ্যমান প্লাস্টিক দূষণের বড় সমাধান করবে’।
১৪০ কোটি নাগরিক সৃষ্ট দৈনন্দিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনেক দিন ধরেই হিমশিম খাচ্ছে চীন। পূর্ব এশিয়ার দেশটির সবচেয়ে বড় ভাগাড় প্রায় ১০০টি ফুটবল মাঠের সমান। এরপরও নির্ধারিত সময়ের ২৫ বছর আগেই এটি ভরে গেছে আবর্জনায়। জানুয়ারিতে, চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন বর্জ্য কমানোর জন্য পাঁচ বছরের একটি রোডম্যাপ তৈরি করে। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের শেষ নাগাদ চীনের বড় শহরগুলোয় নিষিদ্ধ হবে অপচনশীল প্লাস্টিক ব্যাগ। এ ছাড়া ২০২২ সালের মধ্যে সব নগর ও শহরে পণ্যটির ব্যবহার নিষিদ্ধ হবে। এ ছাড়া ২০২০ সালের শেষ নাগাদ চীনের রেস্তোরাঁশিল্পে একবার ব্যবহারের জন্য তৈরি স্ট্র নিষিদ্ধ হবে। হোটেলগুলোকে বলা হয়, ২০২২ সালের মধ্যে তাদের অবশ্যই একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পণ্য গ্রাহককে দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য হয় চীনে। যদিও ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যবহারের ক্ষেত্রে গড় পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় কম। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে চীন ৬ কোটি ৩০ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন করে। এসব প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের হার ৩০ শতাংশ।