মহামারির দুই ঢেউয়ে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল ভারতের হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা। আশা ছিল, নতুন বছরে লোকসানের বোঝা কিছুটা কমানো যাবে। কিন্তু সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে সে আশার গুড়ে বালি।
দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকা অমিক্রনের ঢেউ সামলাতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে ভারতের সর্বত্র। হোটেল-রেস্তোরাঁশিল্পের সংগঠন ফেডারেশন অব হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (এফএইচআরএআই) দাবি, করোনার একের পর এক ঢেউয়ে সবার আগে ও সবার চেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে তারা। ভারতজুড়ে শুধু এই ব্যবসাতেই রুজি-রোজগার হারিয়েছেন পাঁচ কোটি মানুষ। সংখ্যাটা যাতে আর না-বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে আর্থিক সাহায্য ছাড়া পথ নেই। ইতিমধ্যেই বিশেষ প্রণোদনা চেয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আরজি জানিয়েছে তারা। ইকোনমিক টাইমস সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।
এফএইচআরএআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট গুরবক্সিশ সিংহ কোহলির বক্তব্য, করোনার উপর্যুপরি হানায় কখনো বন্ধ, কখনো সামান্য সময়ের জন্য চালু হয়েছে হোটেল–রেস্তোরাঁ। আবার কখনো দীর্ঘ সময় বন্ধ থেকেছে। অথচ ব্যবসা বন্ধ থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটাতেই হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। মেটাতে হচ্ছে সরকারি মাশুল ও কর। এর আগে সরকারের প্রণোদনা প্রকল্পের ঋণ সুবিধা নিয়ে ও প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের পুঁজি ঢেলে কোনোভাবে হোটেল–রেস্তোরাঁ চালু রেখেছে। যারা পারেনি, তারা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু একাংশের মতে, ঋণ পরিশোধ করাও এখন কঠিন।
এ সংশয়ের আবহে পর্যটন ব্যবসার অন্যতম মৌসুমও কার্যত শেষ হওয়ার পথে। ফলে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর আশা আর করছেন না হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। তাই ভারতের বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছে সাময়িকভাবে সরকারি মাশুল ও কর মওকুফের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
গুরুবক্সিশরা অদূর ভবিষ্যতে আরও একটি বড়সড় সংকটের আঁচ করছেন। তাঁদের মতে, বারবার ব্যবসা হোঁচট খাওয়ায় অনেক হোটেল–রেস্তোরাঁ কর্মী এখন আর এ খাতে কাজ করতে চাইছেন না। এর জেরে আগামী দিনে দক্ষ কর্মী পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে, এমন আশঙ্কা অমূলক নয়।