উত্তর মেরু অঞ্চলের একটি নদীতে ২০ হাজার টন তেল ছড়িয়ে পড়ায় জরুরি অবস্থা জারি করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জরুরি অবস্থার মানে, এই তেল অপারেশনে সহায়তা করার জন্য অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনার মারাত্মক বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে পরিবেশের ওপর। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার প্রথমে সাইবেরিয়ার নরিলস্ক শহরের একটি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাখা তেলের ট্যাংক ফুটো হয়ে যায়। ওই তেল উত্তর মেরু অঞ্চলে থাকা একটি নদীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
মঙ্গলবারের আগে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের নজরে আসেনি। ঠিক কীভাবে ট্যাংকার ফুটো হয়ে তেল বের হলো, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এমনকি রাশিয়ার কর্মকর্তারা বিষয়টি জানতে পারেন ঘটনার দুদিন পর। এতে ব্যাপক চটেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। এ ঘটনায় দেরিতে সাড়া দেওয়ায় বুধবার এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কোম্পানির প্রধানকে একরকম ধুয়ে দেন পুতিন। তিনি সহায়ক সংস্থার প্রধান সের্গেই লিপিনের কাছে জানতে চান, ‘সরকারি সংস্থা কেন ওই ঘটনা দুই দিন পর জানতে পারল? আমরা কি এখন জরুরি অবস্থাগুলো সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জানব?’
এর আগে ওই অঞ্চলের গভর্নর আলেকজান্ডার উস পুতিনকে বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশের পরে গত রোববার তেল ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে জানতে পারেন তিনি।’
ওই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নরিলস্ক নিকেলের একটি সহায়ক প্রতিষ্ঠান। রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান নরিলস্ক নিকেল ধাতব পদার্থ নিকেল ও প্যালাডিয়াম উৎপাদনকারী বিশ্বের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান। রাশিয়া ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফিনল্যান্ডে কারখানা পরিচালনা করে নরিলস্ক নিকেল।
পুতিন দুর্ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন ব্যবস্থাপককে আটক করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে নরিলস্ক নিকেল জানায়, ঘটনার সম্পর্কে যথাসময়ে ও যথাযথ উপায়ে জানানো হয়েছিল। তারা জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ট্যাংকে আটকে রাখা স্তম্ভগুলি ডুবে যেতে শুরু করলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। অঞ্চলটি পারমাফ্রস্টের ওপর রয়েছে, যা জলবায়ু উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গলে যাচ্ছে। পারমাফ্রস্ট হচ্ছে বরফ-জমাট অবস্থায় থাকা মাটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনার ব্যাপ্তি বিশাল। এ ঘটনায় উত্তর মেরু অঞ্চল থেকে তেল সরানো কঠিন হবে। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দূষণে পড়েছে।