চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে চীনের রপ্তানি খাতে বড় ধরনের টান পড়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মহামারি আকার ধারণ করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। করোনার কারণে চীনের ব্যবসায়ীরা তাঁদের পণ্য রপ্তানি বন্ধ করতে বা সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে।
গত বছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় চলতি বছরের এ সময়ে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ পণ্য রপ্তানি কম হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এত বড় বিপর্যয় আর হয়নি। চীনের শুল্ক বিভাগের দেওয়া উপাত্ত বলছে, গত দুই মাসে চীনের আমদানি ৪ শতাংশ কমেছে। আজ শনিবার এ উপাত্ত প্রকাশ করা হয়।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত চীনে এ ভাইরাসে মৃত মানুষের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যে চীনের পাল্লা ভারী। বাণিজ্যযুদ্ধের এটাও একটা কারণ বলে মনে করা হয়। এ বাণিজ্য ৪০ শতাংশ কমে গেছে গত দুই মাসে। আগের বছর এটি ছিল ৪২ বিলিয়ন ডলার আর গত দুই মাসে হয়েছে ২৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
প্রথমবারের মতো জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বাণিজ্য চিত্র প্রকাশ করল চীন।
অর্থনীতিবিদ ও নীতি বিশ্লেষকেরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে যা ভাবা হয়েছিল, বাস্তবে অর্থনীতিতে প্রভাব আরও বেশি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকনোমিকসের জুলিয়ান ইভান্সপ্রিটচার্ড বলেছেন, দুই মাসের মিলিত উপাত্তের মধ্যে প্রকৃত চিত্র নেই। আসলে বাস্তবে অবস্থা আরও ভয়াবহ।
আরেক নীতি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান মুডিস অ্যানালিটিকসের অর্থনীতিবিদ জু জিয়াচুন আজ এএফপিকে বলেন, চীনের বাণিজ্যের এই নিম্নহার মার্চ পর্যন্ত চলতে পারে। জু বলেছেন, ‘কয়লা ও বিদ্যুৎ ব্যবহারের সাম্প্রতিক উপাত্ত বলছে, শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার অগ্রগতি খুব বেশি না। চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় চীনের পণ্য চাহিদা আরও কমে গেছে।’