বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সংকটে পড়া চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম আবাসন সংস্থা এভারগ্র্যান্ডের কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বহুজাতিক ব্যাংকিং সংস্থা এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। যদিও ব্যাংক দুটি বলছে, তারা তাদের সরাসরি বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) লাগাম টেনে ধরেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
চীন ও হংকংয়ে মুনাফার একটি বড় অংশ বিনিয়োগ করে এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। এখানকার ডেভেলপারদের ঋণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে তারা। তাই মনে করা হচ্ছে, এই এভারগ্র্যান্ডের ঋণসংকট সেকেন্ডারি প্রভাব ফেলবে এই দুই ব্যাংকের ওপর। জেপি মরগ্যানের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথাই বলা হয়েছে। তবে ওই প্রতিবেদনে কোনো মন্তব্য করেনি এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড।
বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীরা এখন আতঙ্কে রয়েছেন যে এভারগ্র্যান্ড তাঁদের ঋণের সুদ পরিশোধ করবে কি না, তা নিয়ে। উদ্বিগ্ন শেয়ারহোল্ডাররাও। ২০২০ সালে এইচএসবিসির মোট মুনাফার প্রায় ৮৪ শতাংশ হংকং ও চীন এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের মুনাফার ৮১ শতাংশ গিয়েছিল চীন ও উত্তর এশিয়ায়। এই দুটি ব্যাংক চীনের সম্পত্তির খাতে সরাসরি ঋণ প্রদান করে। প্রত্যক্ষ হিসাবে চীনের জিডিপির ১৪ শতাংশ, পরোক্ষ হিসাব যোগ করলে ২৫ শতাংশ অবদান রাখে সম্পত্তি খাত।
এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড—উভয়েই বলেছে যে তাদের এভারগ্র্যান্ডে সরাসরি কোনো বিনিয়োগসীমা নেই। সেই সঙ্গে কয়েক বছর ধরে তারা যেকোনো একটি খাতে তাদের বিনিয়োগসীমা সাবধানে পরিচালনা করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে ব্যাংক দুটি যা–ই বলুক না কেন, তাদের ওপর প্রভাব পড়বে, তা নিশ্চিত বলে মনে করছে জেপি মরগ্যান।
বিশ্ববাজারে এ মুহূর্তে এভারগ্র্যান্ডের ঋণের পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি ডলার। শুধু নির্মাণ ব্যবসা নয়, স্বাস্থ্য, গাড়ি, সংবাদমাধ্যম, আর্থিক সংস্থা, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ নানা ধরনের ব্যবসা রয়েছে এভারগ্র্যান্ডের। এখন দেনার ফলে নির্মাণ ব্যবসা বন্ধ হলে বাকিগুলোর ওপরও প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চীনে এ সংস্থার বর্তমানে ১ হাজার ৩০০টি নির্মাণ প্রকল্প চলমান। মোট কর্মী ২ লাখের বেশি, এ ছাড়া অস্থায়ী কর্মী প্রায় ৩৮ লাখ।