রপ্তানি আয়

আগস্টে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৪.৩২%

পোশাকের রপ্তানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে পাট ও পাটজাত, কৃষি প্রক্রিয়াজাত, প্রকৌশল, হস্তশিল্প ও রাসায়নিক পণ্যের রপ্তানি আয়।

করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে দেশের পণ্য রপ্তানি খাত। মহামারির ধাক্কায় গত এপ্রিল, মে ও জুন মাসে রপ্তানি কমলেও জুলাইয়ে দশমিক ৫৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। আগস্টে এসে রপ্তানি ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বেড়েছে। ওই মাসে রপ্তানি হয়েছে ২৯৬ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে ৬৮৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় আগের ২০১৯–২০ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে ৬৭৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে ৫৭১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কম। সামগ্রিকভাবে পোশাক রপ্তানি কমলেও নিট পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন পোশাকের রপ্তানি কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ।

তৃতীয় প্রান্তিকে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। বাতিল ও স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশের পণ্যও যাচ্ছে। সে জন্য পণ্য রপ্তানি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
মোস্তাফিজুর রহমান, ফেলো, সিপিডি

অবশ্য গত মাসের পোশাক রপ্তানির তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের বরাত দিয়ে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছিল আগস্টে ৩৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। আর বিজিএমইএর হিসাবের চেয়ে ৯০ কোটি ডলার কম পোশাক রপ্তানি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি। তবে বিষয়টির কোনো সমাধান গতকাল পর্যন্ত হয়নি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৪৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ১৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের। কিন্তু পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি বাড়লেও সরকারি পাটকলগুলো ১ জুলাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পাটের মতো কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানিতেও ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যে ১৭ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩২ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

এদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে ১৫ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম। গত বছরের জুলাই-আগস্টে সাড়ে ১৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল বলেন, করোনার কারণে বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে পণ্য রপ্তানি ধাক্কা খেয়েছে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। বাতিল ও স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশের পণ্যও যাচ্ছে। সে জন্য পণ্য রপ্তানি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।