টাকায় টাকা আনে আর টাকা ছাড়া কিছুই হয় না—এ ধারণা নিয়ে অনেকেই অপেক্ষা করেন, কবে টাকা জমবে আর ব্যবসা শুরু করবেন। কেউ কেউ ব্যাংকে ব্যাংকে দৌড়ে টাকা জোগাড় করেন। তবে অনেক সফল উদ্যোক্তা আছেন, যাঁরা টাকার জন্য পিছিয়ে থাকেননি। যা আছে, তা নিয়েই শুরু করেছেন, ধীরে ধীরে ব্যবসা বেড়েছে। তেমনই একজন চীনা ই–কমার্স জায়ান্ট আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা।
বর্তমানে নানা বিষয়ে চীনা সরকারের রোষানলে পড়লেও জ্যাক মা নিঃসন্দেহে একজন সফল মানুষ। একজন স্কুলশিক্ষক থেকে আজ বিশ্বের অন্যতম উদ্যোক্তা, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী। পুরোপুরি নিজের প্রচেষ্টায় আলিবাবার মতো একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে বিশ্বের অন্যতম সফল উদ্যোক্তাদের একজন হয়েছেন। তাই তাঁর পরামর্শ যে গ্রহণযোগ্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। নানা সময় তরুণ উদ্যোক্তাদের তিনি পরামর্শ দিয়েও থাকেন। একবার রাশিয়ার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তিনি বলেছিলেন কীভাবে নগদ অর্থ ছাড়াও ব্যবসা শুরু করা যায়।
নবীন উদ্যোক্তাদের প্রথম চাহিদা থাকে অর্থের। কিন্তু একজন নতুন ব্যবসায় কেই–বা অর্থ লগ্নি করতে চায়? এমন অবস্থায় কাজ শুরু করা সত্যিই দুরূহ। জ্যাক মা অবশ্য মনে করেন, অর্থ জোগাড় করতে না পারাটা খুব বড় সমস্যা নয়। বড় বিষয় হচ্ছে উদ্যোক্তা তার কাজটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারছেন কি না। তাঁর কথা হলো, যদি উদ্যোক্তা তাঁর কাজটা ঠিকমতো করতে পারেন, তাহলে এতে উদ্যোগের প্রতি গ্রাহক এবং অর্থ লগ্নিকারী দুই পক্ষেরই আগ্রহ তৈরি হয়।
জ্যাক মাকে একজন উদ্যোক্তা প্রশ্ন করেছিলেন, তাঁর কাছে তো আলিবাবার মতো টাকা নেই। তাহলে কীভাবে তিনি তাঁর কুরিয়ার ব্যবসার সংযোগ তৈরি করবেন। জ্যাক মা বলেন, সফলদের থেকে কখনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। আলিবাবা যখন তৈরি হয়, তিনিও কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ পাননি। এমনকি বড় কোনো কুরিয়ার কোম্পানিও আলিবাবার পণ্য পৌঁছানোর দায়িত্ব নিতে চায়নি। জ্যাক মা তখন ছোট ছোট উদ্যোগ খুঁজে বের করেন, যাদের কাজের পরিধি কম কিন্তু তারা নবীন উদ্যোক্তার জন্য কাজ করতে আগ্রহী। এই রকম সংযোগ তৈরি করাও খুবই জরুরি।
দেখা যায়, শুরুতে একজন নতুন উদ্যোক্তা নানান ধরনের ছাড়পত্র নেওয়া, অগ্র ও পশ্চাৎ সংযোগ তৈরি করার কাজগুলো করতে করতে হতোদ্যম হয়ে পড়েন। কেউ কেউ অভিযোগ করেন ব্যবসার পরিবেশ নেই। এ ক্ষেত্রে জ্যাক মা উল্টো প্রশ্ন করেন, সব যদি বাজারে তৈরিই থাকে, তাহলে উদ্যোক্তার কাজের উপযোগ কী থাকবে? জ্যাক মার মতে, যখন কোনো কিছু তৈরি নয়, সে সময়টিই ব্যবসা শুরুর উপযুক্ত সময়। এই সময়ের সুযোগ নিতে হবে এবং এগিয়ে যেতে হবে। মোদ্দাকথা, পিছিয়ে আসা যাবে না।