তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের বিভিন্ন পণ্য ও নতুন প্রযুক্তি নিয়ে রাজধানী ঢাকায় এক ছাদের নিচে অনুষ্ঠিত হবে তিনটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) আগামী ৬ থেকে ৯ নভেম্বর এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
প্রদর্শনী তিনটি হচ্ছে ২৩তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৪, ২২তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফ্যাব্রিক শো ২০২৪ (সামার এডিশন) ও ৪৩তম ডাই ও ক্যাম বাংলাদেশ ২০২৪ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো।
চার দিনব্যাপী এই টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশন বা প্রদর্শনীমালা আয়োজন করেছে কনফারেন্স অ্যান্ড এক্সিবিশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস বা সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ। আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর বিষয়ে বিস্তারিত জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
আগামী ৬ নভেম্বর বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছে সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ। এই অনুষ্ঠানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রতিনিধিসহ খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সেমস-গ্লোবালের সিইও এস এস সারওয়ার, নির্বাহী পরিচালক তানভীর কামরুল ইসলাম ও সেমস-বাংলাদেশের বিপণন বিভাগের প্রধান মাহমুদ রীয়াদ হাসান।
লিখিত বক্তব্যে মেহেরুন এন ইসলাম বলেন, অতীতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা বিদেশে বিভিন্ন প্রদর্শনীতে গিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য কাঁচামাল সম্পর্কে জানতেন। এখন দেশেই এ সুযোগ করে দিয়েছে সেমস-গ্লোবাল। গত ২২ বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছর ২৩তম বারের মতো এসব প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রদর্শনীগুলো বিদেশি ও দেশি সরবরাহকারী, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা হওয়ায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দেশের বাইরে গিয়ে ক্রেতা অনুসন্ধান বা ভিসা জটিলতা পোহাতে হবে না; বরং অর্থ, শ্রম ও সময়ের সাশ্রয়ে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্প–সংশ্লিষ্ট ক্রেতা ও সরবরাহকারীরা এক ছাদের নিচে একত্র হতে পারবেন।
সেমস-গ্লোবালের সিইও এস এস সারওয়ার বলেন, দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে বিদেশি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের অনেকেই বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের পণ্য ও প্রযুক্তি নিয়ে আয়োজিত এই প্রদর্শনী বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে। এটি সফল হলে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও ইতিবাচক হবে।
আয়োজকেরা বলেন, এই প্রদর্শনীগুলো সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের একটি অংশ; প্রতিবছর বাংলাদেশ, ব্রাজিল, মরক্কো, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়। টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশন ইতিমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের অগ্রগতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
প্রদর্শনী তিনটিতে মোট ২ হাজার ২৪৫টির বেশি বুথে ৩৭টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৪৭৫টির বেশি কোম্পানির অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকায় অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী তিনটিতে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল মেশিনারি, ইয়ার্ন, ফ্যাব্রিক, ট্রিমস, অ্যাকসেসরিজ, ডাইস্টাফ ও টেক্সটাইল কেমিক্যালসসহ সর্বাধুনিক টেক্সটাইল পণ্য প্রদর্শন করা হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সব গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পের ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য অত্যাধুনিক ও নিত্যনতুন প্রযুক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এটি একটি ওয়ান-স্টপ প্ল্যাটফর্ম হবে। এ ছাড়া প্রদর্শনীগুলো টেক্সটাইল শিল্প–সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক নির্মাতাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে একই ছাদের নিচে নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ থাকবে।
আয়োজক সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ নিউইয়র্কভিত্তিক পেশাদার বহুজাতিক প্রদর্শনী ও সম্মেলন আয়োজক সংস্থা। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত সেমস-গ্লোবল ৩১ বছরের বেশি সময় ধরে চারটি মহাদেশে বাণিজ্য ও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক খাত সংশ্লিষ্ট পেশাদার বিজনেস-টু-বিজনেস (বি-টু-বি) ট্রেড শো আয়োজন করে আসছে।