ব্যবসায় ফিরেছেন পানিবন্দী নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা

বৃহস্পতিবার রাতে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় শুক্র ও শনিবার নিউমার্কেটে ব্যবসা হয়নি। এখনো ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ হয়নি।

দোকান খুলেছেন নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা

গত বৃহস্পতিবার রাতে টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। এতে বিশেষ করে ব্যবসাকেন্দ্র নিউমার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেটে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দোকানিরা মালামাল অন্যত্র না সরাতে না পারায় এর একাংশ পানিতে ভিজে যায়। পরে পানি নেমে গেলেও পণ্যের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। পরের দুই দিন শুক্র ও শনিবার ব্যবসায়ীরা ভেজা মালামাল শুকানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। গতকাল রোববারও কিছু ব্যবসায়ীকে মালামাল শুকানোর কাজ করত দেখা গেছে।

গতকাল নিউমার্কেটে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির জমা পানিতে ভিজে বিভিন্ন দোকানের লাখ লাখ টাকার পণ্য নষ্ট হয়েছে। পানি নেমে গেলেও ক্ষতচিহ্ন রয়ে গেছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই তথ্য অবশ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে নিউমার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেটের ৫০০ দোকানের মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি।

সাধারণত শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় নিউমার্কেট এলাকায় বেচাকেনা হয় সবচেয়ে বেশি। অথচ শুক্র ও শনিবার বিক্রি তো দূরের কথা, কার্যত মার্কেটই ছিল বন্ধ। দোকানে পানি ঢুকে মালামাল ভিজে যাওয়ায় বেচাকেনা করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। ক্রোকারিজ, জুতা, বই, ইলেকট্রনিকস পণ্যসামগ্রী, ব্যাগ-লাগেজ এসবের দোকানই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বই, কাপড়চোপড় ও গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসপত্রই নষ্ট হয়েছে বেশি।

গতকাল বিকেলে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পানিতে নিউমার্কেটের ৫০০ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কত হবে, তা বলা যাচ্ছে না। কারণ, একেকজনের ক্ষতির পরিমাণ একেকরকম। তা ছাড়া অনেকের দোকানের ফার্নিচারও নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া শুক্র ও শনিবার মার্কেটে কোনো ব্যবসা হয়নি, তাতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়েছে। তবে আমরা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কথা বলেছি। এমন পরিস্থিতি যাতে আর তৈরি না হয়, সে জন্য তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে আমাদের আশস্ত করেছে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিউমার্কেটের দোকানগুলো মোটামুটি গুছিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে নিউ সুপার মার্কেটের অনেক দোকানে এখনো ভেজা জিনিসপত্র রয়েছে। মূলত জায়গা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে এই মার্কেটের জিনিসপত্র বাইরে সেভাবে বের করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তাতে ভেজা জিনিস শুকাতে অনেক সময় লাগছে।

জুয়েল ক্রোকারিজের মালিক জুয়েল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে থেকে সতর্ক থাকার পরেও লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ক্রোকারিজ পণ্য হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে সব মালামাল এখনো ধুয়ে–মুছে উঠতে পারিনি। পানি দ্রুত নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি এমন হতো না।’

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে অবিরাম বৃষ্টি দেখে অনেক ব্যবসায়ী সতর্ক হয়ে যান। ফলে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে উল্লেখ করে নিউ সুপার মার্কেটের বাংলা বেডিংয়ের বিক্রেতা শরিফ আহসান প্রথম আলোকে বলেন, পানি উঠার সময় থেকেই অনেক ব্যবসায়ী মালামাল দ্রুত ওপরে উঠিয়ে ফেলেন। না হলে মার্কেটের ভেতরে যেভাবে পানি উঠেছে, তাতে ক্ষতি আরও বেশি হতো।