বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কিছু কর্মকর্তা–কর্মচারী
বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কিছু কর্মকর্তা–কর্মচারী

বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবিতে আবার বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া দুই ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও হাবিবুর রহমানের পদত্যাগের দাবিতে আবার বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর আগে তাঁরা গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করে দুই ডেপুটি গভর্নরকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কর্মকর্তা–কর্মচারীদের দাবির মুখে আগে দুই ডেপুটি গভর্নর পদত্যাগ করেছিলেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩০ তলা ভবনের সামনে আজ রোববার দুপুরে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। সে সময় তাঁরা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কয়েকটি ব্যাংক লুটপাট করে টাকা বের করে নিয়েছে। এই লুটপাটে সহায়তা করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ডেপুটি গভর্নরসহ বিভিন্ন স্তরের কিছু কর্মকর্তা। কিন্তু সরকার পতনের পর আন্দোলনের মুখে চুক্তিভিত্তিক দুই ডেপুটি গভর্নর ও পলিসি অ্যাডভাইজার নিয়োগ বাতিল হলেও এখনো দুজন বহাল রয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বলেন, ব্যাংক লুটপাটে যেসব অসাধু কর্মকর্তা ব্যবসায়ীদের সহায়তা করেছেন, তাঁদের অনেকেই আগের পদে ও বিভাগে বহাল রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাত সংস্কারে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণে আগের সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া দুই ডেপুটি গভর্নরকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি যেসব কর্মকর্তা অনিয়মে জড়িত ছিলেন, তাঁদেরও বদলি করতে হবে। তা না হলে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে আবারও আন্দোলন করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, তা আমাদের সামনে হয়েছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চেষ্টা করা হলে কর্মকর্তাদের বদলিসহ নানাভাবে হেনেস্তা করা হয়েছে। ফলে যাঁরা সৎ ও যোগ্য কর্মী, তাঁরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারেননি। সাবেক সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংককে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আর এতে সহায়তা করেছেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ডেপুটি গভর্নররা।’

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে সংস্কার চেয়েছি, সেই কাঙ্ক্ষিত সংস্কার করতে পারছি না। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে যেখানে ছিলেন, সেখানে তাঁদের কর্তৃত্ব অব্যাহত রেখেছেন। তাই বিগত সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত দুই ডেপুটি গভর্নরকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।’

ফরেন এক্সচেঞ্জ অপারেশনস বিভাগের পরিচালক মো. বায়েজিদ সরকার বলেন, গত ৭ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেছিলেন। তখন বলা হয়েছিল, আগের সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সবাইকে পর্যায়ক্রমে চলে যেতে হবে। তবে ওই দাবি এখনো পুরোপুরি মেনে নেওয়া হয়নি।

পরিসংখ্যান বিভাগের পরিচালক মো. আনিস উর রহমান বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালনা পর্ষদ পুর্নগঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত আশানুরূপ সংস্কার দেখা যায়নি। কারণ, এসব ব্যাংকে যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের অনেকেই স্বৈরাচারী সরকারের দোসর ছিলেন।