রাজধানীতে ডিমের পাইকারি দাম গতকালের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে খুচরা বাজারে ডিম কিনতে গেলে চড়া দাম দিতে হচ্ছে। ডজনপ্রতি ডিমের দাম ১৭০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। চড়া দামের কারণে ডিমের বেচাকেনা ইতিমধ্যে কিছুটা কমে এসেছে। তবে সরবরাহ বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন যে ডিমের দাম আস্তে আস্তে কিছুটা কমে আসবে।
আজ রোববার সকালে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুদিদোকান থেকে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম কিনতে গেলে ডজনপ্রতি দাম পড়ছে ১৭০ টাকা। তবে কোথাও কোথাও ১৭০ টাকা ডজনের ওপরেও ডিম বিক্রি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বড় বাজার থেকে কিনলেও ১৬৫ টাকার নিচে কোথাও ডিম কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না। বাদামি রঙের চেয়ে সাদা রঙের ডিমের দাম কিছুটা কম থাকলেও এখন এই দুই রঙের ডিম অধিকাংশ জায়গাতে খুচরায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ বাজারের ডিম ব্যবসায়ী তানভীর হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাইকারিতে ডিমের দাম একটু কমেছে। তাই আমরাও একটু কমিয়ে রাখছি। কিন্তু বেশি দামে আগে কেনা ডিম ব্যবসায়ীদের হাতে এখনো আছে। এ জন্য সমন্বয় করে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে মানুষ বাজার থেকে ডিম কিনছে কম।’
পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকালও তাঁরা বাদামি রঙের প্রতি শতক ডিম ১ হাজার ৩০০ টাকার ওপরে কিনেছিল। আজ সেই ডিম তাঁরা কিনেছেন ১ হাজার ৭০ থেকে ৯০ টাকায়। তাতে পাইকারিতে ডজনপ্রতি দাম পড়ছে ১৫২ থেকে ১৫৫ টাকার মধ্যে। দুই দিন আগেও পাইকারিতে যা ১৬০ টাকার বেশি ছিল। তাতে ডিমের দাম প্রতি শতকে দুই দিনের ব্যবধানে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কমেছে। সাদা রঙের ডিমের দাম প্রতি শতকে বাদামি রঙের ডিমের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকার মতো কম। তবে খুচরা বাজারে এর বিশেষ কোনো প্রভাব নেই।
মহাখালী বাজারের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, গত এক সপ্তাহে পাইকারিতে বাদামি ডিমের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকার ওপরে কিনতে হয়েছে। আকারভেদে আজ ডিমের দাম প্রতি শতকে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ডিমের সরবরাহ বাড়ছে। আশা করা যাচ্ছে, দাম এখন আস্তে আস্তে নেমে আসবে। কারণ, ডিমের দাম বাড়তি থাকায় আমাদের ব্যবসার অবস্থাও ভালো নয়।
ডিমের দাম কমে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ এগ প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পাইকারিতে বাজার একটু করে নামছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী তিন বা চার দিনের মধ্যে দামটা আরও কিছুটা কমে আসবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ২ হাজার ৩৩৮ কোটি। এর আগের অর্থবছরে যা ছিল ২ হাজার ৩৩৫ কোটি। দেশে উৎপাদিত এই ডিম দিয়েই চাহিদা মেটে। খাওয়ার পাশাপাশি ডিমের একটি বড় অংশ ব্যবহার করে বাচ্চাও ফোটানো হয়।
বাজারে সাধারণ ডিমের পাশাপাশি পুষ্টিসমৃদ্ধ নানা ডিমও আছে। এসব ডিম আরেকটু বেশি দামে বিক্রি হয়।