মুরগির মূল্যবৃদ্ধি, কাজী ফার্মস ও সাগুনা ফুডসের সাড়ে ৮ কোটি টাকা জরিমানা

ব্রয়লার মুরগি
ব্রয়লার মুরগি

ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধিসংক্রান্ত মামলায় কাজী ফার্মস ও সাগুনা ফুডস নামের দুটি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। গতকাল সোমবার প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে করা পৃথক দুটি মামলার নিষ্পত্তি করে এই জরিমানা করা হয়।

প্রতিযোগিতা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পর ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তখন এই দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি মামলায় ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগে কাজী ফার্মস লিমিটেডকে পাঁচ কোটি টাকার জরিমানা করা হয়েছে। একই অভিযোগে আরেকটি মামলায় সাগুনা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেডকে ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি জানান, যেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলার রায় এসেছে, তারা চাইলে এই রায়ের ব্যাপারে রিভিউ বা আপিল আবেদন করতে পারে।

কমিশনের আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো পণ্য বা সেবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ, গুদামজাতকরণ বা অধিগ্রহণসংক্রান্ত এমন কোনো চুক্তিতে বা ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, আবদ্ধ হতে পারবে না, যা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে বা বিস্তারের কারণ ঘটায় কিংবা বাজারে মনোপলি (একচেটিয়া) অথবা ওলিগপলি (যেখানে দুইয়ের অধিক কিন্তু অসংখ্য নয়, এমনসংখ্যক ফার্ম বাজার নিয়ন্ত্রণ করে) অবস্থার সৃষ্টি করে।

এ ব্যাপারে কাজী ফার্মসের নিয়োগ করা আইনজীবী এ বি এম হামিদুল মিসবাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাজী ফার্মস একটি সৎ ও আইন মান্যকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, যারা কখনোই যোগসাজশ করা বা মূল্য পাতানোর মতো কর্মকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত হয়নি। প্রতিদিনের বাজারমূল্য জানার জন্য আমাদের নিলামপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও অবাধ একটি ব্যবস্থা। আমরা এ সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে আপিল করব। আশা করছি, আমরা নির্দোষ হিসেবে চিহ্নিত হব।’

প্রতিযোগিতা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে দণ্ডিত প্রতিষ্ঠানগুলো আপিল বা অন্যান্য আইনি পদক্ষেপ শেষ হওয়া সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে কমিশনের আদেশ না মানলে প্রতিযোগিতা আইনের ২৪ ধারা মোতাবেক অনধিক এক বছর কারাদণ্ড বা জরিমানার ক্ষেত্রে প্রতিদিনের জন্য অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে।