আলোচিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নাবিল গ্রুপের চেয়ারম্যান জাহান বক্স মণ্ডল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনও স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গতকাল রোববার ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর চিঠিতে জাহান বক্স মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম এবং আমিনুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী মোছা. ইসরাত জাহান, পুত্র এজাজ আবরার ও কন্যা আফরা ইবনাতের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাঁদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের হিসাবের লেনদেনও স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহারও ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিএফআইইউ জানায়। বিএফআইইউ সূত্র জানায়, কারও ব্যাংক হিসাবে লেনদেন শুরুতে ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করা হলেও পরে সাধারণত এর মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়।
ব্যাংক হিসাব স্থগিতের চিঠিতে জাহান বক্স মণ্ডল, আমিনুল ইসলাম, মোছা. ইসরাত জাহান ও এজাজ আবরারের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা ছয়জন ও তাঁদের প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবসংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল, যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, লেনদেন বিবরণীও বিএফআইইউর কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।
রাজশাহীভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান নাবিল ফিড মিলের চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান। আনোয়ারা বেগম নাবিল গ্রুপের একজন পরিচালক। ইসলামী ব্যাংক থেকে ২০২২ সালের নভেম্বরে নামে ও বেনামে দ্রুতগতিতে অর্থ তুলে নিয়েছিল নাবিল গ্রুপ, যা নিয়ে প্রথম আলোতে ‘ইসলামী ব্যাংকে ভয়ংকর নভেম্বর’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
নাবিল গ্রুপ আরেক আলোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণ–আন্দোলনের মুখে দেশত্যাগ করার পর এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণে থাকা অনেক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম ও তাঁর বৃহত্তর পরিবারের সদস্য এবং তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়।
তবে গত মাসে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলার সময় নাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম এস আলম গ্রুপের সঙ্গে ব্যবসার সম্পর্ক ছাড়া অন্য কোনো সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেন। তিনি তখন বলেন, ‘এস আলম গ্রুপের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছাড়া আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’