শ্রম অধিকার বিষয়ে উদ্বেগ বা শঙ্কার কারণ রয়েছে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) গবেষণা পরিচালক এম এ রাজ্জাক। তিনি বলেন, শ্রম অধিকার বিষয়ে সব সময় উদ্বেগের কারণ রয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি শ্রম অধিকার নিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন একটি স্মারক স্বাক্ষর করেছেন। এ ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও শ্রম অধিকারের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
রাজধানীর বনানীতে আজ রোববার ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের নতুন মাত্রা’ শীর্ষক পিআরআই আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এম এ রাজ্জাক এসব কথা বলেন। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর ও পরিচালক বজলুল হক খন্দকার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তার।
দেশে দেশে শ্রমিকের ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শ্রম পরিবেশের উন্নয়নে গত সপ্তাহে একটি স্মারকে স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এম এ রাজ্জাক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে কি না, সে বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে এতটুকু বলতে পারি, যুক্তরাষ্ট্র অনেক সক্রিয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। তারা যদি মনে করে যে কোনো ব্যবস্থা নেবে, তাহলে তারা নিতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে কিছু সময় লাগে। তবে দেখা গেছে, ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের সমান্তরালে কাজ করে।’
অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ব্যাংকের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আলোচনা করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে অনেকটা তড়িঘড়ি করে দেশে দুটি ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিক কোন মডেলে দেশের ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালিত হবে, তা পরিষ্কার করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার পূর্ণাঙ্গ নীতিমালাও প্রকাশ করা হয়নি। এখানে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। অনেকটা ঘোড়া কেনার আগেই ঘোড়ার লাগাম কেনার মতো অবস্থা হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ৩০ শতাংশের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তার। তিনি বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ রপ্তানি খাত ৩০ শতাংশ বাড়তি অর্থ পাচ্ছে এবং সরকারও ৩০ শতাংশ শুল্ক বেশি পাচ্ছে। তবে এর বিপরীতে দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি থেকে পাওয়া বাড়তি শুল্ক আয়ে সরকার কিছু ছাড় দিতে পারত। তাতে ভোক্তারা কিছুটা স্বস্তিতে থাকত।
পিআরআইয়ের পরিচালক বজলুল হক খন্দকার জানান, দেশের মোট বিনিয়োগের ৭৬ শতাংশ আসে বেসরকারি খাত থেকে। কিন্তু বেসরকারি খাতের মাত্র ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থায়ন আনুষ্ঠানিক আর্থিক খাত থেকে আসে। বাকি অর্থ নিজস্ব সঞ্চয় ও অনানুষ্ঠানিক খাতের বাড়তি সুদের ঋণ থেকে আসে। এসব কারণে ব্যবসায়ের খরচ অনেক বেড়ে যায়।