কার্বন নিঃসরণবিষয়ক প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষমতা অর্জনের তাগিদ 

দেশের করপোরেট খাত আর্থিক প্রতিবেদন দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে তা করতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে তাদের সাসটেইনেবিলিটি (টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন) প্রতিবেদন দেওয়ার সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্য নিয়মকানুন সহজবোধ্য করা দরকার। 

গতকাল মঙ্গলবার ‘দ্য ইএসবিএন এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রিন ডিল ফর বিজনেস: একসিলারেটিং করপোরেট সাসটেইনেবিলিটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন (এসকাপ) এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। 

অনুষ্ঠানে বলা হয়, আইনকানুনের কঠোর প্রয়োগ ও গ্রাহকের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিগুলোর কার্বন নিঃসরণ ও সেগুলোর কার্যক্রমের পরিবেশগত প্রভাববিষয়ক প্রতিবেদন দেওয়ার চাপ ক্রমেই বাড়ছে। ছোট, বড়, মাঝারিসহ সব ধরনের কোম্পানির ওপর এই চাপ তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশেরও অনেক কোম্পানি এই প্রতিবেদন দিচ্ছে।

২০২০ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩২০টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ কোম্পানি ২০১৩-১৭ সালের মধ্যে সাসটেইনেবিলিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। এ বিষয়ে কোম্পানিগুলোর সচেতনতার অভাব আছে; সেই সঙ্গে রয়েছে আর্থিক ইস্যু ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে প্রতিবেদন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সক্ষমতার অভাব। এ নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয় না। 

ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ী নেতা ও মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর অঙ্গীকার আছে; কিন্তু নানা ধরনের সমস্যার কারণে তা হয়ে উঠছে না। এ ছাড়া দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের (এসএমই) সংজ্ঞায়নে সমস্যা আছে বলে উল্লেখ করেন নিহাদ কবির। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে ইউনিলিভার বাংলাদেশের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক শামিমা আখতার বলেন, সাসটেইনেবিলিটি প্রতিবেদন প্রণয়নে কী করতে হবে, সে বিষয়ে ধারণার অভাব আছে দেশে। সে জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে এ বিষয়টি কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। 

প্যানেল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন শাশা ডেনিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, এসকাপের সাসটেইনেবল বিজনেস নেটওয়ার্কের প্রধান সুদীপ রঞ্জন বসু প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে বলা হয়, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এসডিজির ১৩ নম্বর অভীষ্ট অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক কার্যক্রমে পিছিয়ে আছ। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।