ডিম
ডিম

ডিমের দাম আরও বেড়েছে, কারণ কী

রাজধানীর কাঁঠালবাগান বাজার থেকে গত বৃহস্পতিবার ১৬০ টাকায় ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম কেনেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী শাহাদাত হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার আবার তিনি ডিম কিনেছেন; তবে এবারে ১৭০ টাকায়। অর্থাৎ ছয় দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম প্রতি ডজনে ১০ টাকা আর একটিতে ৮৩ পয়সা করে বেড়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত গরমের জন্য খামারে ডিমের উৎপাদন কমে গেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমেছে। আর সরবরাহ কমায় ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল এবং কাঁঠালবাগান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব জায়গায় ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই ডিমের দাম ছিল ১৬০ টাকা। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির সাদা ডিমও অধিকাংশ বাজারে প্রতি ডজন ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; কোথাও কোথাও অবশ্য ৫ টাকা কমেও পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহে সাদা ডিমের ডজন ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে উভয় ধরনের ডিমের দামই ডজনপ্রতি ১০ টাকা করে বেড়েছে।

রাজধানীর তালতলা বাজারের ডিম বিক্রেতা হায়দার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পাইকারি বাজারে ডিমের সরবরাহ কম। এ কারণে বাড়তি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা পর্যায়েও ডিমের দাম বেড়েছে। হায়দার হোসেন জানান, গতকাল তিনি পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকে প্রতি পিস ডিম ১৩ টাকায় কিনেছেন। পরিবহন ও অবচয় খরচ যোগ করে প্রতিটি ১৪ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে প্রতি ডজনের দাম দাঁড়ায় ১৬৮ টাকা। তবে ভোক্তাদের অনেক ক্ষেত্রেই ১৭০ টাকা পর্যন্ত দামে কিনতে হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের মতো বড় বাজারে ডিম কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়। যেমন গতকাল কারওয়ান বাজারে প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৬৫ টাকা ও সাদা ডিম ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাপ্তান বাজারেও এই দামে ডিম বিক্রি হয়েছে।

বাজারে ডিমের দাম অনেক দিন ধরেই বাড়তি রয়েছে। যেমন গত জুলাই মাসের অধিকাংশ দিনেই খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আগস্টেও দাম মোটামুটি এ রকমই ছিল। তবে সেপ্টেম্বর মাসে ডিমের দাম বাড়তে থাকে। মাসের শেষে এসে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৭০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। পণ্য বিক্রয়কারী সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক বছরে ডিমের দাম ১৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির ডিমের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। তাতে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৪২ টাকায় বেঁধে দেওয়া হয়। অর্থাৎ এখন সরকারের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্যের চেয়েও ডজনে ২৩ থেকে ২৮ টাকা বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ এগ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টির পর অতিরিক্ত গরম পড়ায় ডিমের উৎপাদন কমেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমে ডিমের দাম বেড়েছে।