বিদেশি বাণিজ্যিক কার্যালয় স্থাপন ও বিদেশি কর্মীদের কাজের অনুমতির জন্য সংশোধিত নীতিমালায় কিছু নতুন শর্ত যুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করার শর্ত কঠিন হয়েছে। ফলে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ দেশে ব্যবসা শুরু করতে চায় এবং যেসব প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের নতুন কিছু শর্ত পালন করতে হবে। খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব শর্ত পরিপালন করা হলে তাতে বাংলাদেশ লাভবান হবে। তবে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিদেশি বিনিয়োগের নিবন্ধন ও তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডা সম্প্রতি বিদেশি বাণিজ্যিক কার্যালয় স্থাপনের অনুমতি ও বিদেশি কর্মীদের কাজের অনুমতির জন্য সংশোধিত গাইডলাইন বা নীতিমালা করেছে। এর আগে এ–সংক্রান্ত নীতিমালাটি করা হয়েছিল ২০১১ সালে। আগের নীতিমালার এক যুগ অতিবাহিত হওয়ায় পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও বাস্তবতার নিরিখে সেটি আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তাতে সংশোধিত নীতিমালায় যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু শর্ত ও বিধিবিধান। আবার আগের নীতিমালার সঙ্গে মিল রেখে কিছু বিষয় সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। নতুন কিছু শর্ত ও বিধিবিধানের কারণে এ দেশে বিদেশিদের বিনিয়োগ কিছুটা কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিদেশি কোনো লোকসানি কোম্পানি বা সংস্থা বাংলাদেশে শাখা খুলতে পারবে না। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যেসব বিদেশি ঠিকাদার ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে বা করবে, তাদেরও প্রকল্প কার্যালয় হিসেবে নিবন্ধনের আওতায় আসতে হবে।
এ ছাড়া পণ্য বা সেবা খাতে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান শাখা অফিসের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের ১০ বছর পর এ দেশে শিল্প স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট শাখা অফিস বা কার্যালয়ের অনুমোদন নবায়ন করা হবে না বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে। এর ফলে সেবা বা পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠানকে এ দেশে শিল্প স্থাপনের বা পরিপূর্ণ সেবা চালুর উদ্যোগ নিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশে বর্তমানে বিদেশি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা শাখা কার্যালয়ের নিবন্ধন নিয়ে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এ দেশে বাণিজ্যিক বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের কোনো উৎপাদন কার্যক্রম নেই। শুধু বিদেশ থেকে আনা পণ্য এ দেশে বিক্রি করে বিপুল অঙ্কের মুনাফা নিয়ে যাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান।
বিডার কর্মকর্তারা বলছেন, পণ্য বা সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে এ দেশে উৎপাদন শুরুর কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় কোম্পানিগুলো এ দেশে কারখানা বা পরিপূর্ণ সেবা চালুর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাই ভারতের আদলে নতুন নীতিমালায় এ বিধানটি যুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও ভবিষ্যতে কাজে যুক্ত হতে পারেন, এমন বিদেশি কর্মীদের জন্য ন্যূনতম বেতনও পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতে শীর্ষ পদের জন্য ন্যূনতম বেতন দেশভেদে আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। আর টেকনিশিয়ান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট বা সমপর্যায়ের পদের জন্য ন্যূনতম মূল বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ ডলার। এর আগে ২০১১ সালে করা নীতিমালায় বিদেশি কর্মীদের জন্য সর্বনিম্ন মূল বেতন ছিল ৬৫০ ডলার। আর শীর্ষ পদে সর্বোচ্চ মূল বেতন ছিল ২ হাজার ডলার।
বিদেশি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে কর্মরত বিদেশিদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, নিউজিল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও উন্নত বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মূল বেতন হবে ৩ হাজার ডলার। মালয়েশিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ একই মানের দেশের নাগরিকদের কেউ যদি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মূল বেতন হবে ২ হাজার ৮০০ ডলার। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়াসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশের নাগরিকের ক্ষেত্রে ন্যূনতম এ বেতন হবে আড়াই হাজার ডলার।
সংশোধিত নীতিমালায় প্রথমবারের মতো বিদেশি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপাচার্য, অধ্যাপক, সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক, লেকচারার হিসেবে নিয়োজিত বিদেশি নাগরিকদের ন্যূনতম মূল বেতনও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ উন্নত কোনো দেশের নাগরিক যদি এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তবে তাঁর ন্যূনতম মূল বেতন হবে আড়াই হাজার ডলার। একই দেশগুলোর নাগরিকদের কেউ অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে তাঁর বেতন হবে ২ হাজার ৩০০ ডলার। আর সহযোগী অধ্যাপকের ক্ষেত্রে বেতন ১ হাজার ৯০০, সহকারী অধ্যাপকের ক্ষেত্রে ১ হাজার ৮০০ ডলার ও লেকচারার ক্ষেত্রে ১ হাজার ৭০০ ডলার বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে বহুজাতিক কোম্পানি, বিমান ও সমুদ্র পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ক্ষেত্রে এ বেতনকাঠামো কার্যকর হবে না। সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিদেশি কর্মীদের বেতনকাঠামো আন্তর্জাতিক মানে বিবেচিত হবে।
বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত বিডার পরিচালক আরিফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি কর্মীদের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সহজ করতে সংশোধিত এ নীতিমালা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ–আলোচনার পর এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংশোধিত নীতিমালায় নতুন কিছু শর্ত যুক্ত করা হয়েছে আশপাশের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিল রেখে।
আরিফুল হক বলেন, এ নীতিমালার ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি কর্মীদের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া আরও বেশি স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল হবে।
তবে এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠনের নেতারা বলছেন, সংশোধিত নীতিমালার কিছু শর্তের কারণে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা আগের চেয়ে কঠিন হবে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে জটিলতাও দেখা দিতে পারে।
বিষয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই বা ফিকি) নির্বাহী পরিচালক টি আই এম নুরুল কবীর বলেন, ‘আমি মনে করি, বিডা এ নীতিমালা করার আগে নিশ্চয়ই এর সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনায় নিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চয় তাদের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। নতুন যেসব শর্ত আরোপ করা হয়েছে, আশা করি সেসব শর্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বসে একটি কার্যকর পথনকশা তৈরি করা হবে।’
এ দেশে শাখা কার্যালয় খুলতে আগ্রহী বিদেশি কোম্পানি বা সংস্থার পরপর তিন বছর ধারাবাহিক মুনাফা থাকতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা সংস্থার ন্যূনতম এক লাখ মার্কিন ডলারের সম্পদ থাকতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি বা সংস্থার এককভাবে আর্থিক সচ্ছলতা না থাকে, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান, হোল্ডিং কোম্পানির এক কোটি ডলারের সম্পদ থাকতে হবে।
সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুমোদন পাওয়া কোম্পানি বা সংস্থাগুলোকে অনুমোদন পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ৫০ হাজার ডলার বা তার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি বা সংস্থা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ অর্থ আনতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রতি মাসের জন্য ৫ শতাংশ হারে মাশুল গুনতে হবে। এ অর্থ আনতে হবে কোম্পানি বা সংস্থাগুলোর চলতি মূলধন হিসেবে।
বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতসহ উন্নয়ন খাতের সরকারি–বেসরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত বিদেশি সংস্থা, যৌথ উদ্যোগে গঠিত সংস্থা, ঠিকাদারি, উপ–ঠিকাদারি সংস্থাকেও এখন এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিবন্ধন নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের শাখা কার্যালয়ের মতো এসব প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প কার্যালয় হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হবে। তবে এ নিবন্ধন দেওয়া হবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা ও দপ্তরের সুপারিশে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, অনুমোদিত প্রকল্প কার্যালয়গুলোকে কর্মীর বেতন–ভাতা থেকে শুরু করে সব ধরনের আর্থিক লেনদেন করতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। আবার এসব প্রকল্প কার্যালয়ের অধীনে কোনো বিদেশি কর্মী নিয়োগ করা হলে তারও জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের জন্য অনুমোদন নিতে হবে।
এমনকি অনুমোদন পাওয়া বিদেশি প্রকল্প কার্যালয়গুলোকে বাংলাদেশে কোম্পানি আইন মেনে তাদের মূল কোম্পানির সংঘস্মারক, সংঘবিধিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে দাখিল করতে হবে। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে আনা বৈদেশিক মুদ্রার আয়–ব্যয়ের বিবরণ তিন মাস পরপর জমা দিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বিডায়।
সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে শাখা, লিয়াজোঁ, প্রতিনিধি বা প্রকল্প কার্যালয় স্থাপন করতে পারবে না। অর্থাৎ একক ব্যক্তিমালিকানার বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। ২০১১ সালের নীতিমালায় বলা হয়েছিল, বিদেশি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে শাখা, লিয়াজোঁ ও প্রতিনিধি কার্যালয় স্থাপনে নিরুৎসাহিত করা হবে। সংশোধিত নীতিমালায় এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন না দেওয়ার বিধান সরাসরি যুক্ত করা হয়েছে।
সংশোধিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানকে এ দেশে শাখা, লিয়াজোঁ, প্রতিনিধি, প্রকল্প ও যৌথ উদ্যোগে কার্যালয় খোলার অনুমতি দেওয়া হবে, তারা সর্বোচ্চ তিন বছরের জন্য অনুমোদন পাবে। পরে অবশ্য এ মেয়াদ প্রতিবার দুই বছর করে বাড়ানো যাবে। অনুমোদিত এসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজ দেশে অর্থ প্রত্যাবাসন করতে চাইলে এসব প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী বাংলা–ইংরেজি মিলিয়ে এ দেশের দুটি বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে।
নীতিমালার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ এম মাসরুর রিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশি প্রতিষ্ঠান হোক বা দেশি প্রতিষ্ঠান—ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত যেকোনো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকাটা ভালো দিক। সেদিক থেকে বিডার সংশোধিত এ নীতিমালাকে আমি স্বাগত জানাই। তবে শাখা কার্যালয়ের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের এ দেশে উৎপাদনের বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়টি বাজারভিত্তিক হওয়ায় ভালো। কারণ, কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান কোন দেশে কারখানা বা উৎপাদন করবে, সেটি সংশ্লিষ্ট দেশের বাজার ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর নির্ভর করে। তবে আমি মনে করি, ব্যবসা–বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা হতে হবে সহায়তামূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। এসব ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কোনো ব্যবস্থা না থাকাই শ্রেয়। এ ছাড়া বিদেশি কর্মীদের ন্যূনতম বেতন নির্ধারণের বিষয়টি স্বল্প বা মধ্য মেয়াদে ঠিক আছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে এটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও বাজার চাহিদার ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো।’