ডিম
ডিম

কারওয়ান বাজারে নেই ফার্মের মুরগির ডিম, তেজগাঁওয়ে গত রাতেও আসেনি ট্রাক

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আড়তে গত রাতেও ডিমের ট্রাক আসেনি। টানা দুই রাত তেজগাঁওয়ে ডিমের সরবরাহ আসেনি। ফলে পার্শ্ববর্তী কারওয়ান বাজারের কোনো দোকানে আজ মঙ্গলবার সকালে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হতে দেখা যায়নি। দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিম পাওয়া যাচ্ছে, যদিও সরবরাহ কম।

রাজধানীর কৃষি মার্কেটের সব দোকানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। তিনটি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কেবল একটি দোকানে ১৮০ টাকা ডজন দরে ডিম বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, কাপ্তান বাজার থেকে ডিম কেনা যায়নি; সে জন্য ভিন্ন ব্যবস্থায় ডিম সংগ্রহ করতে হয়েছে তাঁদের। অন্যান্য বাজারে ডিম আছে, যদিও সরবরাহ কম।

এদিকে ডিমের নির্ধারিত দর বাস্তবায়ন করতে বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সে কারণে তেজগাঁও আড়তের ব্যবসায়ীরা ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। যেসব বাজারের ব্যবসায়ীরা তেজগাঁও আড়ত থেকে মূলত ডিম সংগ্রহ করেন, সেইসব বাজারে ডিমের সংকট আছে।

অভিযানে ডিমের দাম তেমন একটা কমেনি, বরং কিছু কিছু পাইকারি বাজারে ডিম বিক্রি বন্ধ অথবা কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

রাজধানীর মোট তিনটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিম ডজনপ্রতি ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাড়ামহল্লায় ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৯০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ী আরশাদ হোসেন বলেন, ‘গতকাল ও আজ দোকানে ডিম রাখা হয়নি। ডিম রাখলে ১৮০ টাকা ডজন দরে বিক্রি করতে হয়; তখন আবার ভোক্তা অধিদপ্তর জরিমানা করে।’ সে জন্য ডিমের দাম না কমা পর্যন্ত তিনি ডিম বিক্রির সাহস করছেন না।

স্বল্প আয়ের মানুষের প্রাণিজ আমিষের বড় উৎস ডিমের দাম ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বাড়ছে। ধাপে ধাপে তা ডজনপ্রতি ১৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এখন সেই ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৮০ টাকায় উঠেছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত ৮ আগস্ট ডিমের দাম ছিল ডজনপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬২ টাকা। এর আগে বছরজুড়ে ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৮০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে থাকত।

ডিমের মূল্যবৃদ্ধির জন্য খামারিরা উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং সরবরাহ-সংকটকে দায়ী করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই দুটি সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার ৮ অক্টোবর সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে; কিন্তু উৎপাদন খরচ কমানোর দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। এ পরিস্থিতিতে ডিমের বাজারের অবস্থা জটিল আকার ধারণ করছে।