থাইল্যান্ড ভ্রমণে কর দিতে হবে ৩০০ বাথ

থাইল্যান্ড পর্যটন
ছবি: রয়টার্স

মহামারির পর থাইল্যান্ডের পর্যটন আবার চাঙা হয়েছে। আর ঠিক তখন বিদেশি পর্যটকদের ওপর ভ্রমণ কর আরোপ করেছে দেশটি। এই কর কার্যকর হবে আগামী ১ জুন থেকে। গত বছর এই করারোপের সিদ্ধান্ত হলেও থাই সরকার শেষমেশ সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে।

সব পর্যটককে একই হারে কর দিতে হবে না। বলা হয়েছে, যাঁরা বিমানযোগে থাইল্যান্ডে আসবেন, তাঁদের দিতে হবে জনপ্রতি ৩০০ বাথ বা ৮ দশমিক ৮৪ ডলার। যাঁরা নৌপথে বা স্থল সীমান্ত দিয়ে আসবেন, তাঁদের দিতে হবে ১৫০ বাথ। যাঁরা দিনে এসে দিনে চলে যাবেন, তাঁদের এবং ট্রানজিট যাত্রীদের এই কর দিতে হবে না, যেমন দিতে হবে না দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের।

এ ছাড়া যে বিদেশি নাগরিকেরা থাইল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের অনুমতি নিয়ে আসবেন এবং যাঁরা কূটনৈতিক ও দাপ্তরিক পাসপোর্ট নিয়ে আসবেন, তাঁরাও ছাড় পাবেন।

তবে থাইল্যান্ড ত্যাগ করার সময় যে প্রস্থান কর দিতে হয়, তার সঙ্গে এই করের সম্পর্ক নেই। প্রস্থান কর মূলত বিমানভাড়ার সঙ্গে যোগ করা থাকে। তবে সব বন্দরে এই প্রস্থান কর এক নয়। ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর দিয়ে থাইল্যান্ড ত্যাগের সময় পর্যটকদের ৭০০ বাথ দিতে হয়। এটাই সর্বোচ্চ।

থাইল্যান্ডের পর্যটন ও ক্রীড়ামন্ত্রী ফিপাট রাতচাকিপ্রকর্ন নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, গত মঙ্গলবার থাই সরকার এই করারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় থাই সরকার চলতি বছরে ৩৯০ কোটি ডলার আয় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই অর্থ দিয়ে পর্যটকদের দুর্ঘটনা বিমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটকেরা ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে হাসপাতালে ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডলার ব্যয় করবেন।

যে পর্যটকেরা থাইল্যান্ডে মারা যাবেন, তাঁদের দেহাবশেষ নিজ দেশে পাঠাতেও এই অর্থ ব্যয় করা হবে।

২০২২ সাল থেকে থাইল্যান্ড কোভিডজনিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়। কোভিডের সময় নিয়ম করা হয়েছিল, থাইল্যান্ড ভ্রমণ করতে ১০ হাজার ডলারের স্বাস্থ্যবিমা থাকতে হবে।

এ বছর থাইল্যান্ডে আড়াই কোটি পর্যটক আসবেন বলে ধারণা করছে থাই সরকার। ২০১৯ সালে সে দেশে পর্যটক এসেছিলেন প্রায় পাঁচ কোটি। অর্থাৎ দেশটির পর্যটন খাত এখনো প্রাক্-মহামারি পর্যায়ে ফিরতে পারেনি। তবে ২০২২ সালে এসেছিলেন মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ পর্যটক।

যথারীতি এই কর নিয়ে দেশটির পর্যটন খাতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করছেন, এই কর থাইল্যান্ডে যেতে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করবে। আবার অনেকেই মনে করছেন, এই অর্থ দেশটির পর্যটন খাতের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

তবে পর্যটন থাইল্যান্ডের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সিংহভাগই আসে পর্যটন খাত থেকে। অর্থাৎ পর্যটক কমে গেলে থাইল্যান্ড অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে।

এদিকে থাইল্যান্ড এখন বেশি পর্যটক আকৃষ্ট করার চেয়ে দীর্ঘদিন সেখানে থাকবেন বা যাঁরা অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে পারবেন, এমন পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। সেই লক্ষ্য থেকেই তারা এই করারোপ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।