ডলার–সংকটের এই সময়ে দেশের প্রকৃত পণ্য রপ্তানি কমেছে। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের এই রপ্তানি আয় তার আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে আজ বৃহস্পতিবার পণ্য রপ্তানির প্রকৃত এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। যদিও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আগে বলেছিল, এই অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রকৃত পণ্য রপ্তানি ইপিবির হিসাবের তুলনায় ১ হাজার ২২০ কোটি ডলার কম হয়েছে।
গত জুলাই মাসে পণ্য রপ্তানির তথ্যে গরমিলের বিষয়টি সামনে আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, এত দিন ইপিবির দেওয়া রপ্তানির তথ্য ধরে হিসাব করা হতো। তবে হিসাব অনুযায়ী দেশে রপ্তানি আয় আসছিল না। এ নিয়ে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, রপ্তানির পরিমাণ কম ছিল। তাই রপ্তানি আয় বেশি আসার যৌক্তিকতা নেই। এখন থেকে প্রকৃত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। এনবিআর ও ইপিবি একই রপ্তানি তথ্য ব্যবহার করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বিদায়ী অর্থবছরের রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করলেও ইপিবি নিজস্ব পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। গত জুলাইয়ে ইপিবির চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, পণ্য রপ্তানির সংশোধিত তথ্য পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে।
এদিকে চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক প্রতিবেদনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য দিয়ে বলা হয়েছিল, বিদায়ী অর্থবছরে ৪৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন অথবা ৪ হাজার ৪৪৭ কোটি ৪৯ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২ কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৬ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৬৪৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। এনবিআরের তথ্যে রপ্তানির দ্বৈত হিসাব থাকার সম্ভাবনা থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে নিট পোশাক, ওভেন পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, রাসায়নিক পণ্য এবং প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি বিভিন্ন হারে কমেছে। অন্যদিকে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।