শ্রম অধিকার ইস্যুতে বিভিন্ন দুর্বলতা থাকায় পশ্চিমা বিশ্ব বিভিন্ন সময় তা সংশোধনের তাগিদ দিয়েছে।
১০ বছর আগে রানা প্লাজা ধসের পর আন্তর্জাতিক চাপের কারণে দেশে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের হার কিছুটা বাড়ে। যদিও বিভিন্নভাবে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এখনো রয়েছে। ইউনিয়ন করতে গিয়ে অনেক শ্রমিক চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া শ্রম আইনের ফাঁকফোকরের কারণেও নিজেদের অধিকার আদায়ে বাধার মুখে পড়ছেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিকনেতারা অভিযোগ করে বলেন, গত এক দশকে শ্রম অধিকারের বিষয়ে বেশ কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে। তবে শ্রম আইনের বাস্তবায়নে তেমন পরিবর্তন আসেনি। বিভিন্ন কৌশলে শ্রমিকদের ঠকানো হচ্ছে। শ্রমিক হয়রানির ঘটনাও ঘটছে। শ্রমিকেরা ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামলে হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে।
শ্রম অধিকার ইস্যুতে বিভিন্ন দুর্বলতা থাকায় পশ্চিমা বিশ্ব বিভিন্ন সময় তা সংশোধনের তাগিদ দিয়েছে। বাণিজ্যে সুযোগ-সুবিধা বজায় রাখতে চাপের মুখে শ্রম আইনেও একাধিকবার সংশোধন করেছে সরকার। সেসব উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও আন্তর্জাতিক মহলকে পুরোপুরি সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ট্রেড ইউনিয়ন চালু করতে অব্যাহতভাবে চাপ দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এদিকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের তিন সপ্তাহের আন্দোলন গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে। এই আন্দোলনে চারজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে শ্রম অধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি রপ্তানিকারকদের, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি কার্যকর করেছে। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি সহজভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করেন শ্রমিক ও মালিকপক্ষের নেতারা।
বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে নতুন নীতি ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, শ্রম অধিকার ও শ্রমিকদের মানসম্মত জীবনযাপন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি স্মারকে (প্রেসিডেনশিয়াল মেমোরেন্ডাম) সই করেছেন। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। যাঁরা শ্রমিকদের অধিকারের বিরুদ্ধে যাবেন, শ্রমিকদের হুমকি দেবেন, ভয় দেখাবেন, তাঁদের ওপর প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ১৭-১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। আর মোট পণ্য রপ্তানির ৮৭ শতাংশ তৈরি পোশাক। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছে ৯৭০ কোটি ডলারের পণ্য। এর মধ্যে তৈরি পোশাক ছিল ৮৫২ কোটি ডলার।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেদের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের তৈরি পোশাকের বড় বাজার। ফলে শ্রম অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতিকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদিও আমরা আইএলওর কনভেনশন ও শ্রম আইন মেনে চলি।’
সাভারের আশুলিয়ার একটি কারখানায় ২০১৯ সালে ট্রেড ইউনিয়ন করার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন। তখন মালিকপক্ষ ইউনিয়ন গঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে চাকরিচ্যুত করলে প্রক্রিয়াটি থেমে যায়।
২০২২ সালে ইউনিয়নের আবেদন করলে তা বাতিল হয়। চলতি বছরের মার্চে আবারও আবেদন করলে এখনো শ্রম অধিদপ্তর নিবন্ধন দেয়নি। যদিও মালিকপক্ষ ইউনিয়ন ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কমপক্ষে ২০ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের বিষয়টি ৫৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেটি পরিপালন করছে না শ্রম অধিদপ্তর। অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও সুরাহা পাইনি।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছোট কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করা গেলেও বড় কারখানায় করা খুবই কঠিন। এসব কারখানায় মালিকপক্ষের পছন্দ অনুযায়ী লোকদেখানো ইউনিয়ন করা হচ্ছে।
সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন গত বছর আটটি কারখানার ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে পাঁচটি আবেদন বাতিল হয়। তিনটির নিবন্ধন পায় তারা। চলতি বছর এই ফেডারেশন ছয়টির আবেদন করলে বাতিল হয় চারটি। বাকি দুটির নিবন্ধন এখনো পায়নি তারা।
জানতে চাইলে শ্রমিকনেত্রী নাজমা আক্তার বলেন, মালিকপক্ষের ক্ষমতা কমাতে হবে। শ্রমিকদের মূল্যায়ন করতে হবে। যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনে নামলেই ম্যানেজ করা কিংবা বন্দুকের নলের ভয় দেখিয়ে দমন করলেই সমাধান আসবে না। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালার অধীনে অর্থনীতিতে যেন কোনো নেতিবাচক পদক্ষেপ না আসে, সে জন্য সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারছি না। আমরা ইউনিয়ন করার উদ্যোগ নিলেই শ্রমিকদের হয়রানি করা হয়। চাকরিচ্যুতও করা হয়। অন্যদিকে মালিকপক্ষের লোকজন আবেদন করলেই ইউনিয়নের নিবন্ধন পেয়ে যান।’
১৯৮৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরে মাত্র ১৩৮টি ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়। অবশ্য রানা প্লাজা ধসের পর পরিস্থিতি বদলে যায়। আন্তর্জাতিক চাপে একের পর এক ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন হওয়া শুরু হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে এক শর বেশি ইউনিয়ন নিবন্ধিত হয়েছে। বর্তমানে ১ হাজার ২০০–এর বেশি ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর নেতারা।
ছয় বছর আগেও ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য একটি কারখানার ৩০ শতাংশ শ্রমিকের স্বাক্ষর লাগত। তখন ইউনিয়ন করা ছিল একপ্রকার দুঃসাধ্য। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় শ্রমিক সংগঠনের চাপে সরকার শ্রম আইন সংশোধন করে ২০১৮ সালে।
সেবার শ্রমিকের স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। ২ নভেম্বর সংশোধিত শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকের মোট সংখ্যা তিন হাজার পর্যন্ত হলে ২০ শতাংশ এবং তিন হাজারের বেশি হলে ১৫ শতাংশ ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য না হলে তা নিবন্ধনের অধিকারী হবে না।
শ্রমিকনেতারা জানালেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন প্রক্রিয়াটি জটিল করে রাখা হয়েছে। কোনো কারখানায় ইউনিয়ন করতে হলে ২০ শতাংশ শ্রমিক (বর্তমানে ১৫ শতাংশ) নিয়ে দুটি বৈঠক করতে হয়। তার মানে, একটি কারখানায় চার হাজার শ্রমিক থাকলে আইন অনুযায়ী বৈঠকে ৮০০ শ্রমিক আনতে হবে। কারখানার ভেতরে এত শ্রমিককে জড়ো করা কঠিন। আবার তাঁদের নাম–স্বাক্ষরসহ শ্রম অধিদপ্তরে জমা দিতে হয়। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কারখানার মজুরি শিট এনে স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই করেন।
এখানে মালিকপক্ষের হস্তক্ষেপে অনেক কিছু ওলট–পালট হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রেজিস্ট্রার সন্তুষ্ট হলেই কেবল ইউনিয়নের নিবন্ধন পাওয়া যায়। এই সন্তুষ্টির বিষয়টি আপেক্ষিক। এভাবে আইনি বাধায় মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন কঠিন করে রাখা হয়েছে।
ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনে বাধার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম বলেন, দেশে দেড় শর বেশি ফেডারেশন রয়েছে। একটি কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে এসব ফেডারেশন নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। অনেক ক্ষেত্রে একটি ফেডারেশন অন্য ফেডারেশনের ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন স্বাভাবিক করতে ফেডারেশনের সংখ্যা কমানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
জাতীয় সংসদে ২ নভেম্বর পাস হওয়া শ্রম আইন সংশোধন বিল অনুযায়ী, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি আরও ৮ দিন বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। কোনো মালিক তাঁর প্রতিষ্ঠানে সজ্ঞানে কোনো নারীকে তাঁর সন্তান প্রসবের পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে কোনো কাজ করাতে পারবেন না বা কোনো নারী ওই সময়ের মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবেন না।
শ্রমিকনেতারা অভিযোগ করে বলেন, প্রসূতি কল্যাণসুবিধা কমানোর জন্য আইনের আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে। শ্রম আইনের ৪৮ ধারা অনুযায়ী, মাতৃত্বকালীন ছুটির নোটিশের আগের তিন মাসের মজুরির ভিত্তিতে এক দিনের মজুরির হিসাব ঠিক করার কথা। তার ভিত্তিতে প্রসূতিকালীন বেতন পাবেন নারী শ্রমিক। তবে গত বছর শ্রম বিধিমালা সংশোধনের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়ার আগের মাসের মজুরির ভিত্তিতে করা হয়েছে। সন্তান প্রসবের আগের তিন মাস নারী শ্রমিকেরা শারীরিক জটিলতায় ভোগেন। তখন তাঁরা অতিরিক্ত কাজ করতে পারেন না। এতে তাঁদের মজুরি কিছুটা কমে যায়।
অন্যদিকে কোনো কারখানা যদি কোনো শ্রমিককে মৌখিকভাবে চাকরিচ্যুত করে, তাহলে সেই শ্রমিক চাকরিচ্যুতির কাগজপত্র ছাড়া শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন না। অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারখানাগুলো মৌখিকভাবে শ্রমিক ছাঁটাই করে থাকে। শ্রম আইনের ২৭ (৩) ধারা অনুযায়ী, কোনো শ্রমিক কারখানা কর্তৃপক্ষকে না বলে ১০ দিন অনুপস্থিত থাকলে তাঁর পদত্যাগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যাবে। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ছাঁটাই করতে চাইলে কারখানা কর্তৃপক্ষ কৌশলে দুই সপ্তাহের মৌখিক ছুটি দেয়। এরপর ওই ধারা অনুযায়ী তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়।
জানতে চাইলে শ্রমিক সংগঠনের আন্তর্জাতিক জোট ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সভাপতি আমিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শ্রমিকবান্ধব নয়, গণতান্ত্রিক শ্রম আইনের কথা বলে আসছি। কিন্তু বারবার সংশোধন করলেও সেখানে ঘাটতি থাকছে। এবারের শ্রম আইন সংশোধনের কমিটিতে ৫৩টি বিষয় সমাধান হয়নি। ত্রিপক্ষীয় কমিটিতে আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধানের নিয়ম থাকলেও তা পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় শ্রম আইন সংশোধিত হওয়ার কারণেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শ্রমিক আন্দোলন দমাতে হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনাও প্রতিনিয়ত ঘটছে। সর্বশেষ পোশাকশিল্পের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন দমাতে শুধু আশুলিয়া ও গাজীপুরে কারখানা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ৪৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ২০ হাজার। এখন পর্যন্ত ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই আন্দোলনে গাজীপুরে চারজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আন্দোলনের পর গত সপ্তাহ থেকে পোশাকশিল্পে কাজ চলছে।
অবশ্য মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক আন্দোলনে আগেও মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৯ সালে মজুরি নিয়ে শ্রমিক আন্দোলনে গাজীপুরের কোনাবাড়ী ও গাছা, সাভার, আশুলিয়া ও টঙ্গী পূর্ব থানায় ২৮ মামলায় ৫ হাজার ৮৪৫ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। সে সময় ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি) সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, ৯৯টি কারখানার ১১ হাজারের বেশি শ্রমিক ছাঁটাই ও বরখাস্ত হয়েছেন।
জানতে চাইলে শ্রমিকনেত্রী নাজমা আক্তার বলেন, মালিকপক্ষের ক্ষমতা কমাতে হবে। শ্রমিকদের মূল্যায়ন করতে হবে। যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনে নামলেই ম্যানেজ করা কিংবা বন্দুকের নলের ভয় দেখিয়ে দমন করলেই সমাধান আসবে না। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালার অধীনে অর্থনীতিতে যেন কোনো নেতিবাচক পদক্ষেপ না আসে, সে জন্য সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।