কেরানীগঞ্জের পোশাকপল্লি
কেরানীগঞ্জের পোশাকপল্লি

পোশাকপল্লি

শেষ মুহূর্তে এসে জমে উঠেছে বেচাকেনা 

ঢাকার কেরানীগঞ্জের পোশাকপল্লির পাইকারি বাজারে ঈদের বেচাবিক্রি জমে উঠেছে। শেষ সময়ে মূলত ঢাকা ও আশপাশের এলাকার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন এই পোশাকপল্লিতে ছুটে আসছেন। তাঁরা নিজেদের ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের পোশাক কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে কেরানীগঞ্জের পোশাকপল্লির পাইকারি বাজার এখন বেশ সরগরম।

পোশাকপল্লির ব্যবসায়ীরা বলেন, রাজধানী থেকে শুরু করে সারা দেশের শপিং মল বা বিপণিবিতান, মার্কেট, হাটবাজার ও ফুটপাতের দোকানিরাও এসে তৈরি পোশাক কিনে নিয়ে যান। তাঁদের দাবি, কেরানীগঞ্জের পোশাকের দাম কম ও গুণগত মান ভালো হওয়ায় সবাই এখানে আসেন। এ কারণে সারা দেশের তৈরি পোশাকের মোট চাহিদার বড় অংশই মেটায় কেরানীগঞ্জ পোশাকপল্লি।

কেরানীগঞ্জের আগানগর, পূর্ব আগানগর, আলম বিপণিবিতান, নুরু মার্কেট, চরকালীগঞ্জ, কালীগঞ্জ, খেজুরবাগ এলাকাসহ প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে গড়ে উঠেছে এই পোশাকপল্লি। এখানে রয়েছে ১০ হাজার শোরুম, ৫ হাজার ছোট-বড় কারখানা। 

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ, চরকালীগঞ্জ, আগানগর, পূর্ব আগানগর ও খেজুরবাগ এলাকার জিলা পরিষদ মার্কেট, তানাকা মার্কেট, আশা কমপ্লেক্স, খাজা মার্কেট, এস আলম সুপার মার্কেট, নুর সুপার মার্কেট, চৌধুরী মার্কেট, আলম সুপার মার্কেট ও ইসলাম প্লাজা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা পোশাক কিনতে এই পোশাকপল্লিতে ভিড় করছেন।

তালহা গার্মেন্টসের মালিক মনির হোসেন বলেন, পবিত্র শবে বরাতের পর থেকে কেরানীগঞ্জ পোশাকপল্লিতে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বেচাকেনা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই আগের তুলনায় পাইকারদের আনাগোনা কমে গেছে। 

পূর্ব আগানগরের আলম টাওয়ার মার্কেটের দি শাহিন গার্মেন্টসের পরিচালক মো. শাহীন বলেন, ‘আমরা মূলত পাঞ্জাবি–পায়জামা বিক্রি করে থাকি। শেষ মুহহূর্তে ব্যবসা মোটামুটি ভালো চলছে।’

১৪–১৫ বছর ধরে কেরানীগঞ্জে পণ্য কিনতে আসেন গাজীপুরের ব্যবসায়ী ইলিয়াস পাটোয়ারী। তিনি বলেন, এখানে সব বয়সের মানুষের উপযোগী তৈরি পোশাক পাওয়া যায়। তিনি জানান, কেরানীগঞ্জে প্যান্ট ৩০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং মেয়েদের পোশাক ২০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

এবার বগুড়া থেকে দুবার পোশাক কিনতে এসেছেন সেখানকার শিহাব গার্মেন্টেসের মালিক রমিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কেরানীগঞ্জের পোশাকের দাম কম। এখানে বিদেশি পোশাকের আদলে তৈরি করা হয় বলে বাজারে এগুলোর চাহিদাও বেশি।’

কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছর শবে বরাতের পরদিন থেকে ২৫ রমজান পর্যন্ত পাইকারেরা এসে পোশাক কিনে নিয়ে যান। তবে এবার রমজানের শুরুতে পাইকারদের আনাগোনা কম ছিল। ২০ রমজানের পর থেকে পাইকারদের সমাগম বেড়ে যায়। এখন পোশাকপল্লিতে চলছে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনা।