সর্বজনীন পেনশনে কত টাকার কিস্তিতে মাসিক কত টাকা পাওয়া যাবে

সমাজের কোন শ্রেণির মানুষ, কোন ধরনের পেনশন কর্মসূচিতে মাসে কত টাকা করে জমা করলে কত টাকা করে পেনশন পাবেন, এ বিষয়ে আজ সোমবার ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা-২০২৩’ জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। আপাতত চালু হচ্ছে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতা—এ চার ধরনের স্কিম।

আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করবেন। গণভবন, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও রংপুর জেলা এবং সৌদির আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস প্রান্ত থেকে এ স্কিমের উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিয়েছে অর্থ বিভাগ।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, ১৮ বা তার বেশি থেকে ৫০ বছর বয়সী জাতীয় পরিচয়পত্রধারী যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক পেনশন স্কিমে অংশ নেওয়ার জন্য নিবন্ধিত হতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও যেকোনো ধরনের পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক, যাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তাঁরা পাসপোর্টের ভিত্তিতে নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁদের এনআইডি নিয়ে সরকারের কাছে জমা দিতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় রয়েছেন যাঁরা, তাঁরাও পেনশন স্কিমের আওতায় আসতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় তাঁরা যে সুবিধা ভোগ করে থাকেন, তা তাঁদের বাদ দিতে হবে।

দেশে বা বিদেশে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকেরা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ফরম অনলাইনে পূরণ করে আবেদন করতে হবে। আবেদনের বিপরীতে একটি ইউনিক আইডেনটিটি নম্বর (ইউআইডি) দেওয়া হবে।

আবেদনে উল্লেখ থাকা আবেদনকারীর মুঠোফোন নম্বর এবং অনিবাসীদের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় ই-মেইলের মাধ্যমে ইউআইডি নম্বর, চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা দেওয়ার তারিখ জানানো হবে। চাঁদা জমা দিতে হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে। আর জমা দেওয়া যাবে অনলাইন ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান এবং তফসিলি ব্যাংকের যেকোনো শাখার মাধ্যমে।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাঁদা দিতে না পারলে পরের এক মাসের মধ্যে জরিমানা ছাড়া চাঁদা দেওয়া যাবে। এক মাস পার হলে পরের প্রতিদিনের জন্য ১ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে হিসাব সচল করা যাবে।

কোন স্কিম কাদের জন্য
প্রবাস স্কিমটি শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। তাঁরা বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা দেবেন। প্রবাসীদের কেউ দেশে ফিরে এলে সমপরিমাণ চাঁদা দেবেন দেশীয় মুদ্রায়। মেয়াদ পূর্তিতে তাঁরা দেশীয় মুদ্রায় পেনশন পাবেন। একেবারে দেশে ফিরে এলে তাঁরা স্কিম পরিবর্তনও করতে পারবেন।

প্রগতি স্কিম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের জন্য। স্কিমের চাঁদা কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ এবং মালিকপক্ষ ৫০ শতাংশ হারে বহন করবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্কিমে অংশ নিতে না চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নিজ উদ্যোগে এ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

সুরক্ষা স্কিম হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক খাত; অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য। উদাহরণস্বরূপ রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি পেশার মানুষেরা এ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। আর সমতা স্কিম হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য, যাঁদের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার কম।