২০২২-২০৩৫ সালের জন্য চূড়ান্ত করা ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাকে (ড্যাপ) বৈষম্যমূলক ও ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে, তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের নেতারা।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নেতারা বলেন, দুই বছর আগে করোনাকালে তড়িঘড়ি করে নামমাত্র গণশুনানি করে এবং মানুষের মতামত আমলে না নিয়ে ড্যাপের প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এর ফলে ঢাকা শহরের উন্নয়ন একেবারেই স্থবির হয়ে পড়ে। সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এক বছরের মধ্যে কিছু সংশোধন করা হলেও আবাসন শিল্পের স্থবিরতা কাটেনি। জনগণের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ বুধবার রিহ্যাবের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে এ কথাগুলো বলেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, সহসভাপতি আব্দুল লতিফ, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য ও পরিবেশসম্মত নগর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তী সময়ে খাল-বিল, নদী-নালা, জলাশয়, ধানি জমি, শিল্পাঞ্চল, রাস্তাঘাট ও আবাসিক এলাকা সংরক্ষণে ২০১০ সালে ড্যাপ প্রণয়ন করা হয়। এর ভিত্তিতে ঢাকার রাস্তাঘাট প্রশস্ত ও পরিবেশসম্মত ভবন নির্মাণ হয়ে আসছিল।
ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ২০২২ সালের বৈষম্যমূলক ড্যাপের কারণে ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় আগে ভবনের যে আয়তন পাওয়া যেত, তার তুলনায় এখন ৬০ শতাংশ পাওয়া যায়। এর ফলে খাল-বিল, জলাশয় ও কৃষিজমি দ্রুত হ্রাস পাবে।
নতুন ড্যাপের কারণে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা প্রকল্প নিতে পারছেন না বলে দাবি রিহ্যাব সভাপতির। তিনি বলেন, যাঁরা ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ি করেন, তাঁরাও ভবনের নকশা পাস করাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারণ, অনেক এলাকায় আগে যেখানে আটতলা ভবন নির্মাণ করা যেত, সেখানে নতুন ড্যাপ অনুযায়ী করা যাবে চার থেকে পাঁচতলা। নতুন ড্যাপের প্রজ্ঞাপন জারির পর আবাসন খাতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। আগামী বছর থেকে সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করবে। বিশেষ করে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে একটি ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে। এতে আবাসন খাতের সংযোগ শিল্পেও স্থবিরতা নেমে আসবে। তাতে দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক সংকট তৈরি হবে।
রিহ্যাবের পক্ষ থেকে এর সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ২০২২-৩৫ সালের ড্যাপ বাতিলের দাবি জানান। একই সঙ্গে তিনি ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ ও ২০১০ সালের ড্যাপ অনুযায়ী ভবনের নকশা অনুমোদনের সুযোগ দাবি করেন।